এসএসসি জীববিজ্ঞান - অধ্যায়ঃ ১ - জীববিজ্ঞানের ধারণা - কনসেপ্ট নোট (১)

 



অধ্যায় ০১:  জীবন পাঠ
জীববিজ্ঞানের ধারণা



সংজ্ঞা: জীববিজ্ঞান হলো বিজ্ঞানের একটি শাখা যেখানে জীব, জীবনের প্রক্রিয়া এবং জীবের সাথে পরিবেশের মিথস্ক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করা হয়।

বিস্তারিত বর্ণনা:

আমাদের চারপাশে যা কিছু আছে তার মধ্যে কিছু জীবিত আর কিছু জড়। গাছপালা, প্রাণী, পাখি, পোকামাকড় সবই জীব। আর মাটি, পানি, বাতাস, ইট, পাথর এগুলো জড় পদার্থ। জীববিজ্ঞানে আমরা এই জীবদের নিয়ে বিস্তারিত জানবো।

জীববিজ্ঞান একটি প্রাচীন বিজ্ঞান। গ্রিক শব্দ 'bios' (জীবন) এবং 'logos' (জ্ঞান) থেকে 'Biology' শব্দটি এসেছে। মানুষ যখন থেকে চাষবাস শুরু করেছে এবং রোগ নিরাময়ের চেষ্টা করেছে তখন থেকেই জীববিজ্ঞানের চর্চা শুরু হয়েছে। আর্যভট্ট, চরক, সুশ্রুত এঁরা প্রাচীন ভারতের বিখ্যাত জীববিজ্ঞানী ছিলেন।

জীববিজ্ঞানীরা জীবদের বিভিন্ন ভাগে ভাগ করেছেন। যেমন-উদ্ভিদ ও প্রাণী। আবার প্রাণীদের মধ্যে আছে মাছ, পাখি, স্তন্যপায়ী ইত্যাদি। জীববিজ্ঞানীরা জীবের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ, কোষ, জিন, বংশগতি এবং বিবর্তন নিয়ে গবেষণা করেন। তারা আরও অনুসন্ধান করেন কিভাবে জীবেরা পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে বেঁচে থাকে।

বাংলাদেশে জীববৈচিত্র্যে ভরপুর। সুন্দরবন, চিটাগাং পাহাড়ি অঞ্চল, হাওর এসব অঞ্চলে অনেক রকমের উদ্ভিদ ও প্রাণী আছে। জীববিজ্ঞান আমাদের এই জীববৈচিত্র্য সম্পর্কে জানতে সাহায্য করে।

সারসংক্ষেপ বুলেট পয়েন্ট:

  • জীববিজ্ঞান হলো জীবন নিয়ে অধ্যয়ন। (উদাহরণ: মানুষ একটি জীব)
  • জীববিজ্ঞানীরা জীবের গঠন, কার্যাবলী ও বিবর্তন নিয়ে গবেষণা করেন। (উদাহরণ: কিভাবে পদ্ম পানিতে ভেসে থাকে)
  • জীববিজ্ঞান চিকিৎসা, কৃষি ও পরিবেশ বিজ্ঞানের উন্নতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। (উদাহরণ: নতুন ধরণের ধান উদ্ভাবন)
  • বাংলাদেশ জীববৈচিত্র্যে ভরপুর একটি দেশ। (উদাহরণ: রয়েল ব Bengal টাইগার)

বিষয়: জীববিজ্ঞানের শাখা

জীববিজ্ঞানকে মূলত দুটি ভাগে ভাগ করা যায়:

ভৌত জীববিজ্ঞান: এই শাখায় জীববিজ্ঞানের তাত্ত্বিক দিকগুলো নিয়ে আলোচনা করা হয়।

ফলিত জীববিজ্ঞান: এই শাখায় জীববিজ্ঞানের ব্যবহারিক দিকগুলো নিয়ে আলোচনা করা হয়।

ভৌত জীববিজ্ঞানের কিছু গুরুত্বপূর্ণ শাখা হলো:

অঙ্গসংস্থান (Morphology): এই শাখায় জীবের বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ গঠন সম্পর্কে আলোচনা করা হয়। যেমন, আমাদের শরীরের হাত, পা, মাথা, চোখ, নাক, কান ইত্যাদি বাহ্যিক অঙ্গ। আর আমাদের শরীরের ভেতরে হৃদপিণ্ড, ফুসফুস, পাকস্থলী ইত্যাদি হলো অভ্যন্তরীণ অঙ্গ।

শ্রেণিবিন্যাসবিদ্যা (Taxonomy): এই শাখায় জীবজগতের বিভিন্ন জীবকে তাদের বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে বিভিন্ন দলে ভাগ করার রীতিনীতি নিয়ে আলোচনা করা হয়। যেমন, আমরা 'মাছ' বলতে ইলিশ, রুই, কাতলা ইত্যাদি অনেক ধরণের মাছকে বুঝি। কিন্তু বৈজ্ঞানিকভাবে এদেরকে বিভিন্ন দলে ভাগ করা হয়।

শারীরবিদ্যা (Physiology): এই শাখায় জীবদেহের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের কাজ নিয়ে আলোচনা করা হয়। যেমন, আমাদের হৃদপিণ্ড রক্ত পাম্প করে, ফুসফুস শ্বাস-প্রশ্বাসের কাজ করে, পাকস্থলী খাবার হজম করে ইত্যাদি।

কোষবিদ্যা (Cytology): এই শাখায় জীবদেহের গঠন এবং

কার্যাবলির একক, কোষ নিয়ে আলোচনা করা হয়। কোষের গঠন, বিভিন্ন অঙ্গাণু এবং তাদের কার্যাবলি এই শাখার আলোচ্য বিষয়।

বংশগতিবিদ্যা (Genetics): এই শাখায় জীবের বংশগতি, অর্থাৎ কীভাবে একটি জীবের বৈশিষ্ট্য তার সন্তানদের মধ্যে বংশানুক্রমে চলে আসে, তা নিয়ে আলোচনা করা হয়। যেমন, আমাদের চোখের রং, চুলের রং ইত্যাদি বংশগত বৈশিষ্ট্য আমাদের বাবা-মায়ের কাছ থেকে আমরা পেয়ে থাকি।

ফলিত জীববিজ্ঞানের কিছু গুরুত্বপূর্ণ শাখা হলো:

জীবাশ্ববিজ্ঞান (Paleontology): এই শাখায় জীবাশ্ম অধ্যয়ন করে অতীতের জীব সম্পর্কে জানা যায়। যেমন, ডাইনোসরের জীবাশ্ম অধ্যয়ন করে আমরা তাদের সম্পর্কে জানতে পারি।

পরজীবীবিদ্যা (Parasitology): এই শাখায় পরজীবী নিয়ে আলোচনা করা হয়, যারা অন্য জীবের শরীরে বাস করে এবং তাদের থেকে খাদ্য গ্রহণ করে। যেমন, আমাদের শরীরে ম্যালেরিয়া রোগ সৃষ্টি করে এক ধরণের পরজীবী

মৎস্যবিজ্ঞান (Fisheries): এই শাখায় মাছ চাষ এবং মৎস্য সম্পদ ব্যবস্থাপনা নিয়ে আলোচনা করা হয়। বাংলাদেশ একটি নদীমাতৃক দেশ হওয়ায় এখানে মৎস্য চাষ অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

কীটতত্ত্ব (Entomology): এই শাখায় কীটপতঙ্গ নিয়ে আলোচনা করা হয়। কিছু কীটপতঙ্গ আমাদের ফসলের ক্ষতি করে, আবার কিছু কীটপতঙ্গ উপকারী, যেমন মৌমাছি থেকে আমরা মধু পাই।

অণুজীববিজ্ঞান (Microbiology): এই শাখায় অণুজীব, যেমন ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা করা হয়। কিছু ব্যাকটেরিয়া আমাদের রোগ সৃষ্টি করে, আবার কিছু ব্যাকটেরিয়া মাটিতে নাইট্রোজেন স্থির করে যা গাছের বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজন।

কৃষিবিজ্ঞান (Agriculture): এই শাখায় ফসল উৎপাদন এবং কৃষি ব্যবস্থাপনা নিয়ে আলোচনা করা হয়। বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কৃষির গুরুত্ব অপরিসীম।

চিকিৎসাবিজ্ঞান (Medical Science): এই শাখায় মানবদেহ, রোগ এবং চিকিৎসা নিয়ে আলোচনা করা হয়।

জিনপ্রযুক্তি (Genetic Engineering): এই শাখায় জিন manipulate করে নতুন নতুন জীব তৈরি করা এবং বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা করা নিয়ে আলোচনা করা হয়।

পরিবেশবিজ্ঞান (Environmental Science): এই শাখায় পরিবেশ সংরক্ষণ এবং দূষণ নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আলোচনা করা হয়। সারসংক্ষেপ বুলেট পয়েন্ট:

জীববিজ্ঞান হলো জীবন এবং জীবের সাথে সম্পর্কিত বিজ্ঞান।

জীববিজ্ঞানকে মূলত দুটি ভাগে ভাগ করা যায়: 

                                        ভৌত জীববিজ্ঞান এবং 

                                        ফলিত জীববিজ্ঞান

ভৌত জীববিজ্ঞানের শাখাগুলোর মধ্যে রয়েছে অঙ্গসংস্থান (মানুষের হাত), শ্রেণিবিন্যাসবিদ্যা (মাছের বিভিন্ন প্রজাতি), শারীরবিদ্যা (হৃদপিণ্ডের কার্যকারিতা), কোষবিদ্যা, বংশগতিবিদ্যা, বিবর্তনবিদ্যা এবং বাস্তুবিদ্যা।

ফলিত জীববিজ্ঞানের শাখাগুলোর মধ্যে রয়েছে জীবাশ্ববিজ্ঞান, পরজীবীবিদ্যা (ম্যালেরিয়া), মৎস্যবিজ্ঞান, কীটতত্ত্ব (মৌমাছি), অণুজীববিজ্ঞান (ব্যাকটেরিয়া), কৃষিবিজ্ঞান, চিকিৎসাবিজ্ঞান, জিনপ্রযুক্তি এবং পরিবেশবিজ্ঞান।

সূক্ষ্ম পার্থক্য:

শাখা

ভৌত জীববিজ্ঞান

ফলিত জীববিজ্ঞান

লক্ষ্য

জীবন সম্পর্কে মৌলিক জ্ঞান অর্জন

জীববিজ্ঞানের জ্ঞান ব্যবহার করে বাস্তব সমস্যার সমাধান

উদাহরণ

কীভাবে গাছপালা খাবার তৈরি করে তা অধ্যয়ন করা (শারীরবিদ্যা)

কীভাবে ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি করা যায় তা অনুসন্ধান করা (কৃষিবিজ্ঞান)

গবেষণার ধরণ

প্রধানত তাত্ত্বিক

প্রধানত ব্যবহারিক

 

জীবের শ্রেণিবিন্যাস

ভূমিকা:

আজ পর্যন্ত পৃথিবীতে প্রায় ৪ লক্ষ উদ্ভিদ এবং ১৩ লক্ষ প্রাণীর প্রজাতির সন্ধান পাওয়া গেছে। প্রতিনিয়ত নতুন নতুন প্রজাতির সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে। এই বিশাল সংখ্যক জীব সম্পর্কে জানা, বোঝা এবং শেখার সুবিধার জন্য এদেরকে একটি নির্দিষ্ট নিয়মে সাজানোর প্রয়োজন হয়। এই প্রয়োজন থেকেই জীববিজ্ঞানের একটি স্বতন্ত্র শাখা "শ্রেণিবিন্যাসবিদ্যা" এর উদ্ভব হয়েছে।

শ্রেণিবিন্যাস:

শ্রেণিবিন্যাস হলো জীব বা বস্তুর শ্রেণিতে বিন্যাস করা। জীববিজ্ঞানে এটি জীবদের নিয়মিত শ্রেণিবিন্যাস করাকে বোঝায়। শ্রেণিবিন্যাসের মাধ্যমে জীবদের আপেক্ষিক অবস্থান স্থির করা হয়। নতুন আবিষ্কৃত জীবের শ্রেণিবিন্যাস অন্যান্য জীবের সাথে তুলনা করে করা হয়। শ্রেণিবিন্যাসের ফলে জীব সম্পর্কে গবেষণা এবং আলোচনা সহজ হয়। জীববিজ্ঞানের এই শাখায় নামকরণ, শনাক্তকরণ এবং শ্রেণিবিন্যাস অন্তর্ভুক্ত। শ্রেণিবিন্যাসের জন্য জীবের বাহ্যিক এবং অভ্যন্তরীণ গঠন ।

বংশগতি, এবং বিবর্তন ইত্যাদি বিষয় বিবেচনা করা হয়।

শ্রেণিবিন্যাসের উদ্দেশ্য:

  • জীবজগতের ভিন্নতার দিকে আলোকপাত করা।
  • আহরিত জ্ঞানকে সঠিকভাবে সংরক্ষণ করা।
  • পূর্ণাঙ্গ জ্ঞানকে সংক্ষিপ্তভাবে উপস্থাপন করা।
  • প্রতিটি জীবকে শনাক্ত করে তার নামকরণের ব্যবস্থা করা।
  • জীবজগৎ এবং মানবকল্যাণে প্রয়োজনীয় জীবগুলোকে শনাক্ত করে তাদের সংরক্ষণে সচেতন হওয়া।

শ্রেণিবিন্যাসের ইতিহাস:

প্রাচীনকালে শ্রেণিবিন্যাসের প্রচলন থেকে আরম্ভ করে সুইডিশ প্রকৃতিবিদ ক্যারোলাস লিনিয়াস (1707-1778) শ্রেণিবিন্যাসে অসামান্য অবদান রেখেছেন। 1735 সালে তিনি "Systema Naturae" নামে একটি গ্রন্থ প্রকাশ করেন যেখানে তিনি জীবজগতের দ্বিপদ নামকরণ পদ্ধতি প্রবর্তন করেন। এই পদ্ধতিতে প্রতিটি জীবের দুটি নাম থাকে, যেমন মানুষের বৈজ্ঞানিক নাম Homo sapiens। লিনিয়াস জীবজগতকে দুটি প্রধান ভাগে বিভক্ত করেন: উদ্ভিদ এবং প্রাণী। তারপর তিনি উদ্ভিদ এবং প্রাণীদের আরও ছোট ছোট দলে বিভক্ত করেন যেমন শ্রেণি, বর্গ, গণ, প্রজাতি ইত্যাদি। তার এই শ্রেণিবিন্যাস পদ্ধতি আজও ব্যবহৃত হচ্ছে।

আধুনিক শ্রেণিবিন্যাস:

১৯৬৯ সালে, আর.এইচ. হুইটেকার জীবজগৎকে পাঁচটি রাজ্যে ভাগ করার প্রস্তাব করেন। পরবর্তীকালে মারগুলিস (Margulis) 1974 সালে Whittaker-এর শ্রেণিবিন্যাসের পরিবর্তিত ও বিস্তারিত রূপ দেন। তিনি সমস্ত জীবজগৎকে দুটি সুপার কিংডমে ভাগ করেন এবং পাঁচটি রাজ্যকে এই দুটি সুপার কিংডমের আওতাভুক্ত করেন।


(a) সুপার কিংডম 1

প্রোক্যারিওটা (Prokaryotae): এরা আদিকোষ (নিউক্লিয়াস সুগঠিত নয়) বিশিষ্ট এককোষী, আণুবীক্ষণিক জীব।

i. মনেরা (Monera): এই রাজ্যে এককোষী প্রোক্যারিওটিক জীবেরা অন্তর্ভুক্ত। যেমন ব্যাকটেরিয়া, নীলাভ-সবুজ শৈবাল।

  • এদের কোষে নিউক্লিয়াস সুগঠিত নয়।
  • এরা অণুবীক্ষণিক ও এককোষী।
  • কিছু ব্যাকটেরিয়া মাটিতে নাইট্রোজেন স্থির করে, যা উদ্ভিদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।


b) সুপার কিংডম 2

ইউক্যারিওটা (Eukaryota): এরা প্রকৃতকোষ (নিউক্লিয়াস সুগঠিত) বিশিষ্ট এককোষী বা বহুকোষী জীব। এরা এককভাবে অথবা কলোনি আকারে দলবদ্ধভাবে বসবাস করে।

 

(i)প্রোটিস্টা (Protista): এই রাজ্যে এককোষী ইউক্যারিওটিক জীবেরা অন্তর্ভুক্ত। যেমন অ্যামিবা, প্যারামিসিয়াম।

বৈশিষ্ট্য

এককোষী বা বহুকোষী: কিছু প্রোটিস্টা একটি মাত্র কোষ দিয়ে তৈরি, যেমন অ্যামিবা। আবার কিছু প্রোটিস্টা অনেকগুলো কোষ দিয়ে তৈরি, যেমন শৈবাল।

সুগঠিত নিউক্লিয়াস: প্রোটিস্টাদের কোষে সুগঠিত নিউক্লিয়াস থাকে যার ভেতরে ক্রোমাটিন থাকে। ক্রোমাটিন হলো ডিএনএ, আরএনএ এবং প্রোটিনের একটি মিশ্রণ।

খাদ্য গ্রহণ: প্রোটিস্টারা বিভিন্ন ভাবে খাদ্য গ্রহণ করে। অ্যামিবার মতো কিছু প্রোটিস্টা খাদ্য শোষণ করে আবার শৈবালের মতো কিছু প্রোটিস্টা সালোকসংশ্লেষণ করে নিজের খাদ্য তৈরি করে।

প্রজনন: প্রোটিস্টারা অযৌন এবং যৌন উভয় প্রকার প্রজনন করে। অ্যামিবা অযৌন প্রজনন করে কোষ বিভাজনের মাধ্যমে। আবার কিছু প্রোটিস্টা যৌন প্রজনন করে কনজুগেশন এর মাধ্যমে।

সারসংক্ষেপ বুলেট পয়েন্ট:

  • প্রোটিস্টা হলো এককোষী বা বহুকোষী জীব। (উদাহরণ: অ্যামিবা)
  • প্রোটিস্টাদের কোষে সুগঠিত নিউক্লিয়াস থাকে।
  • প্রোটিস্টারা শোষণ বা সালোকসংশ্লেষণ পদ্ধতিতে খাদ্য গ্রহণ করে। (উদাহরণ: শৈবাল)
  • প্রোটিস্টারা অযৌন এবং যৌন উভয় প্রকার প্রজনন করে।
  • প্রোটিস্টারা জলে, মাটিতে এবং অন্য প্রাণীর শরীরে বাস করে


ii. ফানজাই (Fungi): এই রাজ্যে বহুকোষী ইউক্যারিওটিক জীবেরা অন্তর্ভুক্ত, যাদের ক্লোরোফিল নেই। যেমন ছত্রাক, ইস্ট।

বৈশিষ্ট্য

অধিকাংশই স্থলজ: অধিকাংশ ফানজাই মাটিতে জন্মায়। তবে কিছু ফানজাই জলে ও গাছের খোঁড়লে জন্মাতে পারে

মৃতজীবী বা পরজীবী: অনেক ফানজাই মৃত জীবের উপর জন্মে এবং তাদের খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করে। আবার কিছু ফানজাই অন্য জীবের শরীরে পরজীবী হিসেবে বাস করে এবং তাদের থেকে খাদ্য গ্রহণ করে।

এককোষী বা বহুকোষী: কিছু ফানজাই একটি মাত্র কোষ দিয়ে তৈরি, যেমন ইস্ট। আবার কিছু ফানজাই অনেকগুলো কোষ দিয়ে তৈরি, যেমন মাশরুম।

মাইসেলিয়াম: বহুকোষী ফানজাইদের দেহ মাইসেলিয়াম দিয়ে তৈরি। মাইসেলিয়াম হলো সরু সুতার মতো অংশ যা মাটির নিচে ছড়িয়ে থাকে।

কাইটিন কোষপ্রাচীর: ফানজাইদের কোষপ্রাচীর কাইটিন নামক বস্তু দিয়ে তৈরি। কাইটিন একটি শক্ত বস্তু যা ফানজাইদের দেহকে সুরক্ষা প্রদান করে।

খাদ্যগ্রহণ: ফানজাইরা খাদ্য গ্রহণ করে শোষণ পদ্ধতিতে.

তারা তাদের মাইসেলিয়াম থেকে এনজাইম নিঃসরণ করে যা খাদ্যকে পচিয়ে তরলে পরিণত করে। তারপর তারা এই তরল খাদ্য শোষণ করে।

ক্লোরোপ্লাস্ট অনুপস্থিত: ফানজাইদের কোষে ক্লোরোপ্লাস্ট থাকে না। তাই তারা সালোকসংশ্লেষণ করতে পারে না।

বংশবৃদ্ধি: ফানজাইরা বংশবৃদ্ধি করে স্পোর দিয়ে। স্পোর হলো ছোট ছোট কণা যা বাতাস বা জলের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে এবং নতুন ফানজাই তৈরি করে।

সারসংক্ষেপ বুলেট পয়েন্ট:

  • ফানজাই হলো অধিকাংশই স্থলজ, মৃতজীবী বা পরজীবী।
  • ফানজাইদের দেহ এককোষী বা বহুকোষী (মাইসেলিয়াম)।
  • ফানজাইদের কোষপ্রাচীর কাইটিন দিয়ে তৈরি।
  • ফানজাইরা খাদ্য গ্রহণ করে শোষণ পদ্ধতিতে
  • ফানজাইদের কোষে ক্লোরোপ্লাস্ট থাকে না।
  • ফানজাইরা বংশবৃদ্ধি করে স্পোর দিয়ে।


iii. প্লান্টি (Plantae): এই রাজ্যে বহুকোষী ইউক্যারিওটিক জীবেরা অন্তর্ভুক্ত, যাদের ক্লোরোফিল থাকে। যেমন- শ্যাওলা, ফার্ন, আম, জাম।

বৈশিষ্ট্য

প্রকৃত নিউক্লিয়াসযুক্ত: প্লানটিদের কোষে সুগঠিত নিউক্লিয়াস থাকে যার ভেতরে ক্রোমাটিন থাকে। ক্রোমাটিন হলো ডিএনএ, আরএনএ এবং প্রোটিনের একটি মিশ্রণ।

সালোকসংশ্লেষণকারী: প্লানটিরা সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় সূর্যের আলো ব্যবহার করে নিজের খাদ্য তৈরি করে। এই প্রক্রিয়ায় তারা কার্বন ডাইঅক্সাইড এবং জল ব্যবহার করে গ্লুকোজ এবং অক্সিজেন তৈরি করে।

উন্নত টিস্যুতন্ত্র: প্লানটিদের দেহে বিভিন্ন ধরণের টিস্যু থাকে যা বিভিন্ন কাজ করে। যেমন, জাইলেম টিস্যু জল এবং খনিজ লবণ বহন করে এবং ফ্লোয়েম টিস্যু খাদ্য বহন করে।

ভ্রূণ সৃষ্টি: প্লানটিদের যৌন প্রজননের ফলে ভ্রূণ সৃষ্টি হয়। ভ্রূণ হলো একটি অপরিণত উদ্ভিদ যা পরে বৃদ্ধি প্রাপ্ত হয়ে পূর্ণাঙ্গ উদ্ভিদে পরিণত হয়।

ডিপ্লয়েড পর্যায়: প্লানটিদের জীবনচক্রে ডিপ্লয়েড এবং হ্যাপ্লয়েড উভয় পর্যায় থাকে। ডিপ্লয়েড পর্যায় হলো যে পর্যায়ে কোষে দুটি ক্রোমোজোম সেট থাকে।

প্রধানত স্থলজ: অধিকাংশ প্লানটি মাটিতে জন্মায়। তবে কিছু প্লানটি জলে ও জন্মাতে পারে।

অ্যানাইসোগ্যামাস যৌন জনন: প্লানটিদের যৌন জনন অ্যানাইসোগ্যামাস পদ্ধতিতে হয়। অ্যানাইসোগ্যামাস যৌন জননে দুটি ভিন্ন ধরণের গ্যামেট (শুক্রাণু এবং ডিম্বাণু) মিলিত হয়।

আর্কিগোনিয়েট: প্লানটিদের স্ত্রী জনন অঙ্গ হলো আর্কিগোনিয়াম। আর্কিগোনিয়াম ডিম্বাণু তৈরি করে।

সপুষ্পক: প্লানটিরা ফুল ফোঁটায় এবং বীজ তৈরি করে।

সারসংক্ষেপ বুলেট পয়েন্ট:

  • প্লানটি হলো প্রকৃত নিউক্লিয়াসযুক্ত সালোকসংশ্লেষণকারী উদ্ভিদ।
  • প্লানটিদের দেহে উন্নত টিস্যুতন্ত্র থাকে।
  • প্লানটিদের ভ্রূণ সৃষ্টি হয় এবং তা থেকে ডিপ্লয়েড পর্যায় শুরু হয়।
  • প্লানটিদের যৌন জনন অ্যানাইসোগ্যামাস পদ্ধতিতে হয়।
  • প্লানটিরা আর্কিগোনিয়েট এবং সপুষ্পক।


 


iv. অ্যানিমেলিয়া (Animalia): এই রাজ্যে বহুকোষী ইউক্যারিওটিক জীবেরা অন্তর্ভুক্ত, যাদের ক্লোরোফিল নেই। যেমন- পোকামাকড়, মাছ, পাখি, স্তন্যপায়ী। বৈশিষ্ট্য

নিউক্লিয়াসবিশিষ্ট: অ্যানিমেলিয়া জগতের সকল প্রাণীর কোষে সুগঠিত নিউক্লিয়াস থাকে যার ভেতরে ক্রোমাটিন থাকে। ক্রোমাটিন হলো ডিএনএ, আরএনএ এবং প্রোটিনের একটি মিশ্রণ।

বহুকোষী: অ্যানিমেলিয়া জগতের সকল প্রাণী অনেকগুলো কোষ দিয়ে তৈরি। এই কোষগুলো বিভিন্ন ধরণের টিস্যু তৈরি করে যা বিভিন্ন কাজ করে।

কোষপ্রাচীর, প্লাস্টিড ও কোষগহ্বর অনুপস্থিত: অ্যানিমেলিয়া জগতের প্রাণীদের কোষে কোষপ্রাচীর, প্লাস্টিড ও কোষগহ্বর থাকে না।

হেটারোট্রোফিক: অ্যানিমেলিয়া জগতের প্রাণীরা নিজেরা খাদ্য তৈরি করতে পারে না। তারা অন্য জীব খেয়ে খাদ্য গ্রহণ করে।

খাদ্য গলাধঃকরণ: অ্যানিমেলিয়া জগতের প্রাণীরা খাদ্য গলাধঃকরণ করে গ্রহণ করে। তারা খাদ্যকে মুখ দিয়ে গ্রহণ করে এবং পরিপাক তন্ত্রের মাধ্যমে পরিপাক করে।

জটিল টিস্যুতন্ত্র: অ্যানিমেলিয়া জগতের প্রাণীদের দেহে বিভিন্ন ধরণের টিস্যু থাকে যা বিভিন্ন কাজ করে। যেমন, স্নায়ু টিস্যু স্নায়ু সংকেত বহন করে এবং পেশী টিস্যু চলন সম্পন্ন করে।

যৌন জনন: অ্যানিমেলিয়া জগতের প্রাণীরা প্রধানত যৌন জননের মাধ্যমে বংশবৃদ্ধি করে। যৌন জননে পুরুষ এবং স্ত্রী প্রাণীর গ্যামেট (শুক্রাণু এবং ডিম্বাণু) মিলিত হয় এবং জাইগোট তৈরি করে। জাইগোট থেকে নতুন প্রাণী তৈরি হয়।

ভ্রূণীয় স্তর: অ্যানিমেলিয়া জগতের প্রাণীদের ভ্রূণ বিকাশকালীন সময়ে ভ্রূণীয় স্তর তৈরি হয়। ভ্রূণীয় স্তর থেকে বিভিন্ন ধরণের টিস্যু এবং অঙ্গ তৈরি হয়।


সারসংক্ষেপ বুলেট পয়েন্ট:

  • অ্যানিমেলিয়া হলো নিউক্লিয়াসবিশিষ্ট ও বহুকোষী প্রাণী।
  • অ্যানিমেলিয়া জগতের প্রাণীদের কোষে কোনো জড় কোষপ্রাচীর, প্লাস্টিড ও কোষগহ্বর নেই।
  • অ্যানিমেলিয়া জগতের প্রাণীরা হেটারোট্রোফিক অর্থাৎ পরভোজী এবং খাদ্য গলাধঃকরণ করে।
  • অ্যানিমেলিয়া জগতের প্রাণীদের দেহে জটিল টিস্যুতন্ত্র বিদ্যমান।
  • অ্যানিমেলিয়া জগতের প্রাণীরা প্রধানত যৌন জননের মাধ্যমে বংশবৃদ্ধি করে।
  • অ্যানিমেলিয়া জগতের প্রাণীদের ভ্রূণ বিকাশকালীন সময়ে ভ্রূণীয় স্তর সৃষ্টি হয়।

জীববিজ্ঞান: শ্রেণিবিন্যাসের বিভিন্ন ধাপ

ভূমিকা:

জীবজগতের বিশাল বৈচিত্র্যকে সুন্দরভাবে বুঝতে এবং অধ্যয়ন করতে, বিজ্ঞানীরা জীবদেরকে তাদের মিল ও অমিলের ভিত্তিতে বিভিন্ন স্তরে ভাগ করেছেন। এই ধাপগুলোকে একসাথে বলা হয় শ্রেণিবিন্যাসের ধাপ।

শ্রেণিবিন্যাসের ধাপসমূহ

শ্রেণিবিন্যাসের প্রতিটি ধাপে তার আগের ধাপের বৈশিষ্ট্যগুলোর সাথে নতুন কিছু বৈশিষ্ট্য যোগ হয়। যত উপরের ধাপ, তার অন্তর্ভুক্ত বৈশিষ্ট্যের সংখ্যা তত কম এবং অন্তর্ভুক্ত জীবের সংখ্যা তত বেশি। আবার যত নিচের ধাপ, তার অন্তর্ভুক্ত বৈশিষ্ট্যের সংখ্যা তত বেশি এবং অন্তর্ভুক্ত জীবের সংখ্যা তত কম।

একটি জীবকে প্রজাতি পর্যায়ে বিন্যাসে মূলত আন্তর্জাতিক কোড চিহ্নিত সাতটি ধাপ আছে।1 নিচে এই ধাপগুলো উপর থেকে নিচের দিকে ক্রমানুসারে উল্লেখ করা হল:

                               1. রাজ্য (Kingdom)

                                    2. পর্ব (Phylum)

                                        3. শ্রেণি (Class)

                                            4. বর্গ (Order)

                                                5. গোত্র (Family)

                                                    6. গণ (Genus)

                                                        7. প্রজাতি (Species

উদাহরণ:

  • মানুষের (Homo sapiens) শ্রেণিবিন্যাস এই নেস্টেড হায়ারার্কি অনুসরণ করে:
  • রাজ্য (Kingdom): Animalia; কারণ, সুকেন্দ্রিক কোষবিশিষ্ট, বহুকোষী, পরভোজী এবং জটিল টিস্যুতন্ত্র আছে।
  • পর্ব (Phylum): Chordata; কারণ, জীবনের কোনো এক পর্যায়ে নটোকর্ড থাকে।
  • শ্রেণি (Class): Mammalia; কারণ, বাচ্চাকে বুকের দুধ খাওয়ায় এবং লোম/চুল আছে।
  • বর্গ (Order): Primate; কারণ, আঁকড়ে ধরার উপযোগী হাত এবং ঘ্রাণ অপেক্ষা দৃষ্টিশক্তি বেশি উন্নত।
  • গোত্র (Family): Hominidae; কারণ, শিম্পাঞ্জি, গরিলা, ওরাংওটাং প্রভৃতির সাথে সাদৃশ্য আছে।
  • গণ (Genus): Homo; কারণ, দেহের অনুপাতে মস্তিষ্ক সবচেয়ে বড় এবং খাড়াভাবে দুই পায়ে হাঁটতে পারে।
  • প্রজাতি (Species): Homo sapiens; কারণ, চওড়া এবং খাড়া কপাল, খুলির হাড় Homo গণের অন্য প্রজাতির তুলনায় পাতলা এবং বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে উন্নত।

উপসংহার:

শ্রেণিবিন্যাসের এই ধাপগুলো জীবজগতের বৈচিত্র্যকে বুঝতে এবং অধ্যয়ন করতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি বিজ্ঞানীদের জীবদের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপন করতে এবং বিবর্তনের ইতিহাস অনুসরণ করতে সাহায্য করে।

দ্বিপদ নামকরণ পদ্ধতি (Binomial Nomenclature)

ভূমিকা:

জীবজগতের অগণিত জীবের প্রত্যেকটির একটি স্বতন্ত্র নাম থাকা প্রয়োজন। এই প্রয়োজন থেকেই দ্বিপদ নামকরণ পদ্ধতি উদ্ভাবিত হয়েছে। এই পদ্ধতিতে প্রতিটি জীবের নাম দুটি অংশ থেকে গঠিত হয়, যা তাদের গণ এবং প্রজাতি নির্দেশ করে।

সংজ্ঞা:

দ্বিপদ নামকরণ পদ্ধতি হলো এমন একটি পদ্ধতি যেখানে প্রতিটি জীবের একটি অনন্য বৈজ্ঞানিক নাম দেওয়া হয়, যা দুটি ল্যাটিন শব্দ থেকে গঠিত। প্রথম শব্দটি জীবের গণ এবং দ্বিতীয় শব্দটি তার প্রজাতি নির্দেশ করে

উদাহরণ:

  • মানুষের বৈজ্ঞানিক নাম Homo sapiens। এখানে Homo হলো গণ এবং sapiens হলো প্রজাতি।
  • রুই মাছের বৈজ্ঞানিক নাম Labeo rohita। এখানে Labeo হলো গণ এবং rohita হলো প্রজাতি।

ইতিহাস:

১৭৫৩ সালে ক্যারোলাস লিনিয়াস Species Plantarum নামক বইটি প্রকাশ করেন এবং দ্বিপদ নামকরণ পদ্ধতির প্রবর্তন করেন।

তিনি গণ এবং প্রজাতি ধারণার ও সংজ্ঞা দেন।

লিনিয়াস তার বইতে জীবের শ্রেণি, বর্গ, গণ এবং প্রজাতি ধাপগুলো ব্যবহার করেন।


দ্বিপদ নামকরণ পদ্ধতির নিয়মাবলী:

1. ল্যাটিন ভাষা: নামকরণ ল্যাটিন ভাষায় কিংবা ল্যাটিন ভাষার মতো করে উপস্থাপন করতে হবে।

2. দুটি অংশ: বৈজ্ঞানিক নামের দুটি অংশ থাকবে, প্রথম অংশটি গণ নাম এবং দ্বিতীয় অংশটি প্রজাতি নাম।

3. অনন্য নাম: জীবজগতের প্রতিটি বৈজ্ঞানিক নাম অনন্য হতে হবে। একই নাম দুটি পৃথক জীবের জন্য ব্যবহার করা যাবে না।

4. বড় এবং ছোট হাতের অক্ষর: বৈজ্ঞানিক নামের প্রথম অংশের প্রথম অক্ষর বড় হাতের অক্ষর হবে, বাকি অক্ষরগুলো ছোট হাতের অক্ষর হবে। দ্বিতীয় অংশটি সম্পূর্ণ ছোট হাতের অক্ষরে লিখতে হবে।

5. ইটালিক অক্ষর: বৈজ্ঞানিক নাম মুদ্রণের সময় সর্বদা ইটালিক অক্ষরে লিখতে হবে।

6. হাতে লেখার সময় নিচে দাগ: হাতে লেখার সময় গণ ও প্রজাতির নামের নিচে আলাদা আলাদা দাগ দিতে হবে।

7. অগ্রাধিকার আইন: যদি কয়েকজন বিজ্ঞানী একই জীবকে বিভিন্ন নামকরণ করেন, তবে অগ্রাধিকার আইন অনুসারে প্রথম বিজ্ঞানী কর্তৃক প্রদত্ত নামটি গ্রহণ করা হবে।

8. নামকরনকারীর নাম এবং সাল: যিনি প্রথম কোনো জীবের বিজ্ঞানসম্মত নাম দেন, তার নাম প্রকাশের সালসহ জীবের বৈজ্ঞানিক নামের শেষে সংক্ষেপে সংযোজন করতে হবে।

কিছু জীবের দ্বিপদ নাম:

সাধারণ নাম

বৈজ্ঞানিক নাম

ধান

Oryza sativa

পাট

Corchorus capsularis

আম

Mangifera indica

কাঁঠাল

Artocarpus heterophyllus

শাপলা

Nymphaea nouchali

জবা

Hibiscus rosa-sinensis¹

কলেরা জীবানু

Vibrio cholerae

ম্যালেরিয়া জীবানু

Plasmodium vivax

আরশোলা

Periplaneta americana

মৌমাছি

Apis indica

ইলিশ

Tenualosa Ilisha

কুনো ব্যাঙ

Duttaphrynus melanostictus

দোয়েল

Copsychus saularis

রয়েল ব্যাঙল টাইগার

Panthera tigris

মানুষ

Homo sapiens

 

উপসংহার:

দ্বিপদ নামকরণ পদ্ধতি জীববিজ্ঞানের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এটি জীবজগতের বৈচিত্র্য অধ্যয়ন এবং বিশ্লেষণে অত্যন্ত সহায়ক। এই পদ্ধতি ব্যবহার করে বিজ্ঞানীরা সারা বিশ্বে একই ভাষায় জীবদের সম্পর্কে কথা বলতে এবং গবেষণা করতে পারেন।