এসএসসি - বাংলা ১ম পত্র - কাজী নজরুল ইসলাম



 কাজী নজরুল ইসলাম

কাজী নজরুল ইসলামের জন্ম ১১ জ্যৈষ্ঠ, তার জন্মের বছর ১৮৯৯ খ্রিষ্টাব্দে সেটা ছিল ২৪ মে (সনাতন পঞ্জিকা অনুসারে)। কিন্তু গ্রেগরিয়ান তারিখ সাপেক্ষে সনাতন বাংলা তারিখ পরিবর্তনশীল। যেসময়ে তার জীবনী লেখা শুরু হয় (বিশ শতকের মাঝামাঝি), তখন ১১ জ্যৈষ্ঠ পড়ত ২৫ মে। অনেক জীবনীকার ভুলবশত ২৫ মে-কেই ১১ জৈষ্ঠ্য ধরে নিয়েছেন আর অনেক পাঠ্যরচয়িতা জীবনীকারের দেয়া ভুলটাই অনুসরণ করেছেন না জেনে। বর্তমান বাংলাদেশি স্থির ক্যালেন্ডার অনুসারে ১১ জ্যৈষ্ঠ হচ্ছে ২৫ মে। আর সনাতন পঞ্জিকা অনুসারে এখন ১১ জ্যৈষ্ঠ পড়ে ২৬ মে যা ভবিষ্যতে আরো পিছিয়ে যাবে।

 

উপন্যাস

বাঁধন হারা বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম রচিত একটি পত্রোপন্যাস। বাঁধন হারা নজরুল রচিত প্রথম উপন্যাস। মোসলেম ভারত পত্রিকায় বাঁধন হারা-র প্রথম কিস্তি এবং ১৯২১ সালে (১৩২৭ বঙ্গাব্দ) ধারাবাহিক ভাবে প্রকাশিত হয়। ১৯২৭ সালে জুন মাসে (শ্রাবণ, ১৩৩৪ বঙ্গাব্দ) এটি প্রথম গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়। ১৮ টা পত্রের সমন্বয়ে উপন্যাসটি রচিত

মৃত্যুক্ষুধা কাজী নজরুল ইসলাম রচিত একটি উপন্যাস। উপন্যাসটি সওগাত পত্রিকায় ১৩৩৪ বঙ্গাব্দের অগ্রহায়ণ মাস থেকে ২৩৩৬ বঙ্গাব্দের ফাল্গুন মাস পর্যন্ত ধারাবাহিক ভাবে মুদ্রিত হয়। গ্রন্থাকারে এটি ১৩৩৭বঙ্গাব্দের বৈশাখ মাসে (১৯৩০ খ্রিষ্টাব্দ) প্রকাশিত হয়। বলা হয়েছে মৃত্যুক্ষুধা কাজী নজরুলের ইসলামের 'কালজয়ী' উপন্যাস। আরো বলা হয়েছে এটি বাংলা সাহিত্যের প্রথম সাম্যবাদী চেতনার উপন্যাস। শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় এর পথের দাবীর পর এটাই।

কুহেলিকা বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম রচিত একটি উপন্যাস। ১৩৩৪ বঙ্গাব্দের আষাঢ় মাসে কলকাতা থেকে প্রকাশিত মাসিক নওরোজ পত্রিকায় 'কুহেলিকা' উপন্যাসের প্রথম অংশ প্রকাশিত হয়। তার কিছুদিন পুর নওরোজ বন্ধ হয়ে গেলে সওগাত পত্রিকায় তা ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়। ১৯৩১ সালে এটি প্রথম গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়। এই উপন্যাসের মধ্য দিয়ে নজরুলের রাজনৈতিক আদর্শ ও মতবাদ প্রতিফলিত হয়েছে।

 

গল্পগ্রন্থ

ব্যাথার দান ফেব্রুয়ারি, ১৯২২ খ্রিষ্টাব্দে প্রথম প্রকাশিত হওয়া এই গ্রন্থে মোট ৬টি গল্প আছে। এটি নজরুলের প্রথম প্রকাশিত গ্রন্থ। এই গ্রন্থের গল্পগুলোর ভাষা আবেগাশ্রয়ী, বক্তব্য নরনারীর প্রেমকেন্দ্রিক।

রিক্তের বেদন মোট ৮টি গল্প নিয়ে ১৯২৪ খ্রিষ্টাব্দের ফেব্রুয়ারিতে প্রথম প্রকাশিত হয় এই গ্রন্থ।

শিউলি মালা গ্রন্থটি ১৯৩১ খ্রিষ্টাব্দে প্রথম প্রকাশিত হয়। এই গ্রন্থে মোট ৪টি গল্প আছে।

 

প্রবন্ধ

রুদ্রমঙ্গল- কাজী নজরুল ইসলামের রচিত একটি প্রবন্ধ সংকলন। জুলাই ১৯২৭ (১৬ আষাঢ়- ১৫ শ্রাবণ ১৩৩৪), এই গ্রন্থটি প্রকাশিত হয়েছিল।

যুগবাণী- এই বইটি ১৯২২ খ্রিষ্টাব্দের অক্টোবর (কার্তিক ১৩২৯) প্রকাশিত হয়েছিল। গ্রন্থটি তৎকালীন ভারত-সরকার বাজেয়াপ্ত করেছিল। এর দ্বিতীয় মুদ্রণ প্রকাশিত হয়েছিল ১৩৫৬ বঙ্গাব্দের জ্যৈষ্ঠ মাসে।

 

দুদিনের যাত্রী- কাজী নজরুল ইসলামের প্রবন্ধগ্রন্থ। ১৯২১ সালে অর্ধসাপ্তাহিক ধূমকেতুর প্রথম সংখ্যায় বের হয়।

রাজবন্দীর জবানবন্দী - কাজী নজরুল ইসলাম লিখিত একটি প্রবন্ধ। নজরুল সম্পাদিত অর্ধ-সাপ্তাহিক ধূমকেতু ১৯২৩ সালে ব্রিটিশ সরকার নিষিদ্ধ করে। সেই পত্রিকায় প্রকাশিত নজরুলের কবিতা আনন্দময়ীর আগমনে ও নিষিদ্ধ হয়। নজরুলকে জেলে আটক করে রাখার পর তার বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি লিখিতভাবে আদালতে উপস্থাপন করেন চার পৃষ্ঠার বক্তব্য।

 

নিষিদ্ধ বই ও কবিতা

বিষের বাঁশি ১৯২৪ (১ম নিষিদ্ধ) কাব্যগ্রন্থ

অক্ষয়কুমার দত্তগুপ্ত পাবলিক ইন্সট্রাকশন বিভাগকে লেখা চিঠিতে উল্লেখ করেন, 'লেখক বিষের বাঁশির মাধ্যমে তার বিপ্লবী অনুভূতির প্রকাশ করেছেন এবং তরুণদের বিদ্রোহ করতে এবং আইন অমান্য করতে প্ররোচনা দিচ্ছেন...। ১৯২৪ সালের ২২ অক্টোবরের গেজেট ঘোষণায় 'বিষের বাঁশি নিষিদ্ধ হয়।

ভাঙ্গার গাল ১৯২৪ কাব্যগ্রন্থ

'ভাঙার গান' বাজেয়াপ্ত ঘোষণা করা হয় ১৯২৪ সালের ১১ নভেম্বর।

প্রলয় শিখা ১৯৩০- কাব্যগ্রন্থ

কবির মনোজগতে তখন তোলপাড় চলছে। প্রাণাধিক প্রিয় পুত্র বুলবুল মারা গেছে। বিদ্রোহ-বিপ্লবের পুরোধা কবি কেঁদে কেঁদে আকুল। চোখে জল কিন্তু বুকে আগুন। সেই আগুনের ফুলকি ছড়িয়ে পড়ল 'প্রলয় শিখার প্রতিটি শব্দে। 'প্রলয় শিখা' আনুষ্ঠানিকভাবে বাজেয়াপ্ত হয় ১৯৩১ সালে।

চন্দ্রবিন্দু ১৯৩১ গানের বই

প্রলয় শিখা'র রেশ কাটতে না কাটতে বাজেয়াপ্তের খঙ্গ নেমে আসে চন্দ্রবিন্দুর ওপর। এটি মূলত ব্যঙ্গ বিদ্রূপের কবিতার বই। চন্দ্রবিন্দু নিষিদ্ধ হয় 'প্রলয় শিখা নিষিদ্ধ হওয়ার এক মাস পর ১৪ অক্টোবর ১৯৩১ সালে।

যুগবাণী ১৯২২- প্রবন্ধগ্রন্থ

১৯২২ সালে ফৌজদারি বিধির ৯৯৩ ধারানুসারে বইটি বাজেয়াপ্ত করা হয়। তৎকালীন গোয়েন্দা প্রতিবেদনে 'যুগবাণী কে একটি ভয়ংকর বই হিসেবে চিহ্নিত করে বলা হয়, লেখক বইটির মাধ্যমে উগ্র জাতীয়তাবাদ প্রচার করছেন।

আনন্দময়ীর আগমনে ১৯২২ কবিতা

('আনন্দময়ীর আগমনে' কবিতাটি কবির দোলনচাঁপা কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত। এটি কবির ২য় কাব্যগ্রন্থ।)

বিদ্রোহীর কৈফিয়ত কবিতা

কাব্যগ্রন্থ

অগ্নিবীণা

অগ্নিবীণা কাজী নজরুল ইসলামের লেখা প্রথম কাব্যগ্রন্থ যেটি প্রকাশ পায় ১৯২২ সালে। অগ্নিবীণা কাব্যগ্রন্থে মোট বারোটি কবিতা ছিল। যার প্রথমটির নাম প্রলয় উল্লাস। এবং দ্বিতীয়টি কালজয়ী কবিতা বিদ্রোহী।

বিষের বাঁশি

কাজী নজরুল ইসলামের যে পাঁচটি বই নিষিদ্ধ ছিল তার মধ্যে অন্যতম বিষের বাঁশি। এই কবিতার বইটিতে মোট ২৭ টি কর্মক্যা স্থান পেয়েছিল।

সাম্যবাদী

সাম্যবাদী কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয় ১৯২৫ সালে। এই কাব্যগ্রন্থটির মধ্যে মোট ১১ টি কবিতা ছিল।

সর্বহারা

সর্বহারা কাব্যগ্রন্থটি ১৯২৬ সালে প্রকাশিত হয় যার মধ্যে মোট দশটি কবিতা ছিল।

সিন্ধু হিন্দল

উক্ত কাব্যগ্রন্থটি ১৯২৭ সালে প্রকাশিত হয় যার মধ্যে কবিতা ছিল ২৯ টি।

চক্রবাক

চক্রবাক কাব্যগ্রন্থ ১৯২৯ সালে প্রকাশিত হয়। প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থটিতে মোট ১৯ কবিতা ছিল।

সন্ধ্যা

সন্ধ্যা কাব্যগ্রন্থটি ১৯২৯ সালে প্রকাশিত হয় (সন্ধ্যা কাব্যগ্রন্থের নতুনের গান কবিতাটির প্রথম ২১ লাইন আমাদের রণ সঙ্গীত এই সঙ্গীতটি ১৯৭২ সালের ১৩ই জানুয়ারি অনুষ্ঠিত বাংলাদেশের তৎকালীন মন্ত্রীসভার প্রথম বৈঠকে বাংলাদেশের রণ-সঙ্গীত হিসেবে নির্বাচন করা হয়।

প্রলয় শিখা

প্রলয় শিখা কাব্যগ্রন্থটি কাজী নজরুল ইসলামের নিষিদ্ধ কাব্যগ্রন্থের মধ্যে অন্যতম যা ১৯৩০ সালে প্রকাশিত হয় এবং ১৯৩১ সালে নিষিদ্ধ হয়। ১৯৪৭ সালে নিষেধাজ্ঞা উঠে যায়।

কিছু ১ম

০১. প্রথম গল্প বাউণ্ডেলের আত্মকাহিনী (১৯১৯)

০২. প্রথম কবিতা মুক্তি (১৯১৯)

০৩. প্রথম গ্রন্থ: ব্যথার দান (১৯২২) উৎসর্গ নার্গিসকে। যদি ও তাতে তার নাম লেখা হয়নি। উৎসর্গ লিপিতে লেখা হয় (মানসী আমার। মাথার কাঁটা নিয়েছিলুম বলে ক্ষমা করেনি, তাই বুকের কাঁটা দিয়ে প্রায়শ্চিত্ত করলুম।)

০৪. প্রথম নাটক ঝিলিমিলি (১৯৩০)

০৫. প্রথম ছোটদের নাটক পুতুলের বিয়ে (১৯৩৩)

০৬. প্রথম কাব্যানুবাদ রুবাইয়াৎ-ই-হাফিজ (১৯৩০)

০৭. প্রথম রেকর্ডকৃত নজরুল সঙ্গীত জাতের নামে বজ্জাতি সব (১৯২৫)

০৮. প্রথম রেকর্ডকৃত ইসলামী সঙ্গীত ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে

০৯. প্রথম সৃষ্ট রাগ রেণুকা

১০. প্রথম পত্রিকায় কাজ নবযুগ (১৯২০)

১১. প্রথম চলচ্চিত্র কাহিনী বিদ্যাপতি (১৯৩৮)

১২. প্রথম ভাষণ বুলবুল সোসাইটি, চট্টগ্রাম (১৯২৯)

১৩. প্রথম সংবর্ধনা কবির কারা মুক্তির পর (মেদিনীপুর) (১৯২৩)

১৪. প্রথম উপন্যাস বাঁধনহারা (১৯২৭)

১৫. প্রথম প্রকাশিত কাব্য গ্রন্থ অগ্নিবীণা (১৯২২)

১৬. প্রথম প্রবন্ধ তুর্ক মহিলার ঘোমটা খোলা (১৯১৯)

১৭. প্রথম প্রবন্ধগ্রন্থ যুগবাণী (১৯২২)

নাটক

ঝিলিমিলি (১৯৩০) এটি নজরুলের প্রথম নাটক। তিনটি ছোট নাটকের সমন্বয়ে গ্রন্থটি প্রকাশিত হয়। নাটক তিনটি হলো- ঝিলিমিলি, সেতুবন্ধ, শিল্পী।

 

অন্যান্য নাটক:

পুতুলের বিয়ে (১৯৩৩)

আলেয়া (১৯৩১)

ঝড় (১৯৬০)

মধুমালা (১৯৫৯)

পিলে পটকা

এই রচনায় কিছু গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র

বক্তিয়ার খিলজি

মুহম্মদ বখতিয়ার খিলজি ছিলেন ইতিহাসখ্যাত আফগান সেনানায়ক। তিনি মাত্র সতেরো জন সৈন্য নিয়ে অতর্কিত আক্রমণে নদীয়া দখল করেন। রাজা লক্ষ্মণ সেন ভয়ে পলায়ন করলে বখতিয়ার খিলজি বাংলাদেশে প্রথম মুসলিম শাসন প্রতিষ্ঠা করেন (১২০৩/০৪)। এখানে কৌতুকভরে বক্তৃতা প্রদানকারীদেরকে বখতিয়ার খিলজি বলা হয়েছে।

কালাপাহাড়

ব্রাহ্মণ থেকে মুসলমানে ধর্মান্তরিত বিখ্যাত মুসলিম যোদ্ধা। সুলেমান ও দায়ুদ কররানির সেনাপতি, ওরফে রাজু। ইসলাম ধর্ম গ্রহণের পর প্রচণ্ড হিন্দু বিদ্বেষী হন। ১৫৬৮ খ্রিষ্টাব্দে পুরী আক্রমণ করে বহু মন্দির ও দেবদেবীর মুক্তি ধ্বংস করেন। ইতিহাসে তিনি বিকট, ভয়ংকর ও প্রলয়ংকর ধ্বংসের প্রতীক হয়ে আছেন।

কামাল

মুস্তাফা কামাল আতাতুর্ক পাশা (১৮৮১-১৯৩৮)। আধুনিক তুরস্কের জনক ও তুরস্ক প্রজাতন্ত্রের প্রথম রাষ্ট্রপতি। তাঁর পরিচালনা ও নেতৃত্বে তুরস্ক আসন্ন পতনের হাত থেকে রক্ষা পায় এবং সত্যিকার উন্নতির পথে অগ্রসর হয়। ধর্ম, সমাজ, শিক্ষা সবক্ষেত্রেই তিনি আমুল ও বৈপ্লবিক সংস্কার সাধন করেন। আইন-কানুন সংস্কার, আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থার প্রবর্তন, নারীর সমান অধিকার প্রতিষ্ঠা, পর্দা প্রথার উচ্ছেদ, স্বাধীন অর্থনৈতিক বিকাশ, নিরপেক্ষ পররাষ্ট্রনীতি ইত্যাদির মাধ্যমে তিনি আধুনিক তুরস্কের ভিত্তি স্থাপন করেন। দেশবাসী কৃতজ্ঞতার নিদর্শন হিসেবে তাঁকে 'আতাতুর্ক বা তুরস্কের জনক উপাধিতে ভূষিত করেন।

 

মুসোলিনী

সিনর বেনিতো মুসোলিনি (১৮৮৩-১৯৪৫) ইতালির একনায়ক এবং সেখানকার ফ্যাসিবাদী দলের নেতা ছিলেন। উগ্র জাত্যভিমান থেকে তিনি ইতালিকে পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ শক্তিশালী জাতিতে পরিণত করার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করেন। সমগ্র জাতীয় জীবনে কঠোর নিয়ন্ত্রণ এবং আগ্রাসী বৈদেশিক নীতির অনুসারী মুসোলিনী ১৯৩৫ সালে আবিসিনিয়া আক্রমণ করেন। এই ঘটনার সুত্রে ফ্যাসিবাদী হিটলারের সঙ্গে তাঁর বন্ধুত্ব হয়। ১৯৪০ সালে জার্মানির মিত্র হিসেবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে তাঁর নেতৃত্বে ইতালি বৃটেন ও ফ্রান্সের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। যুদ্ধে ইতালির পরাজয় হলে তিনি পদচ্যুত ও বন্দি হন। পরে মুক্তি পেলেও আততায়ীর হাতে নিহত হন।

 

সানইয়াত

সান-ইয়াত-সেন (১৮৬৭-১৯২৫) চীনের জননন্দিত বিপ্লবী রাজনীতিবিদ ও নব্য চীনের জন্মদাতা। উনিশ শতকের শেষ দিকে এবং বিশ শতকের গোড়ায় চীনের মাধু সম্রাটদের শাসন-শোষণ নির্যাতনের বিরুদ্ধে বেশ কিছু বিপ্লবী আন্দোলন হয়। সান-ইয়াত-সেন এগুলোর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিলেন। ১৯১২ সালের বিপ্লবে মাঞ্চু সাম্রাজ্যের পতন হলে তিনি নানকিং প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। দ্বিতীয় বিপ্লব ব্যর্থ হওয়ায় তাঁকে নির্বাসনে যেতে হয়। পরে দেশে প্রত্যাবর্তন করে তিনি বিভক্ত চীনের দক্ষিণ চীন প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রপতি হন। সাম্যবাদ ও বিপ্লবে সুগভীর আছ চীনের জাতীয় কমুসূচি প্রণয়ন, মাঞ্জু রাজতন্ত্রের বিরোধিতা এবং সংস্কার নীতির জন্য চীনের ইতিহাসে তাঁর নাম অবিস্মরণীয় হয়ে থাকবে।

 

লেনিন

ভ্লাদিমির ইলিচ উইলিয়ানোফ (১৮৭০-১৯২৪) বিপ্লবী কাজে জড়িত থাকাকালে লেনিন ছদ্মনাম নেন। তিনি রুশ বিপ্লবের সংগঠক, পরিকল্পক ও নেতা। তাঁর নেতৃত্বে ১৯১৭ সালে রুশ বিপ্লবের সাফল্যে জারের রাজতন্ত্রের পতন ঘটে এবং পৃথিবীর প্রথম সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রের জন্ম হয়। আমৃত্যু তিনি ছিলেন সোভিয়েত রাষ্ট্রের রাষ্ট্রপ্রধান। ব্যাংক ও সম্পত্তি জাতীয়করণ, দরিদ্র জনগণের মধ্যে ভূমি বণ্টন, গণশিক্ষার প্রসার, সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতির মূল ভিত্তি রচনার মাধ্যমে তিনি সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রের রূপকার হিসেবে বিশ্ববিখ্যাত হয়ে আছেন। তিনি ছিলেন প্রথম সফল মার্কসবাদী বিপ্লবী, মার্কসবাদী দর্শনের প্রথম কাতারের তাত্ত্বিক। তাঁর রচিত গ্রন্থাবলি ইতিহাস, দর্শন, অর্থনীতি ও সমাজতত্ত্ব সম্পর্কে তাঁর প্রগাঢ় জ্ঞান ও বিশ্লেষণ-শক্তির পরিচয়বহ হয়ে আছে।