জ্ঞানমূলক
প্রশ্ন
প্রশ্ন ১। সাহিত্যচর্চার আনন্দ থেকে বঞ্চিত হওয়ার
অর্থ কী? [ঢা. বো. '২৪; রা. বো. '২০]
উত্তর: সাহিত্যচর্চার আনন্দ থেকে বঞ্চিত হওয়ার
অর্থ হলো জাতির জীবনীশক্তি হ্রাস করা।
প্রশ্ন-২। কোনটি শিক্ষার সর্বপ্রধান অঙ্গ? [রা.
বো. '২৪]
অথবা, শিক্ষার সর্বপ্রধান অঙ্গ কী? [কু. বো.
'১৬ ]
উত্তর: শিক্ষার সর্বপ্রধান অঙ্গ হলো সাহিত্যচর্চা।
প্রশ্ন ৩। শিক্ষক কীসের সন্ধান দিতে পারেন?
[দ. বো. '২৪]
উত্তর: শিক্ষক মনোরাজ্যের ঐশ্বর্যের সন্ধান
দিতে পারেন।
প্রশ্ন ৪। পেশাদারদের মহাভ্রান্তি কী? [ম. বো.
'২৪]
উত্তর: যে কথা জজে শোনে না, তার যে কোনো মূল্য
নেই; এটাই হচ্ছে পেশাদারদের মহাভ্রান্তি।
প্রশ্ন ৫। প্রমথ চৌধুরীর সাহিত্যিক ছদ্মনাম কী
ছিল? [সকল বোর্ড '১৮; ঢা. বো. '২৩; কু. বো. '২৩, '১৭; চ. বো. '২৪, '১৫]
উত্তর: প্রমথ চৌধুরীর সাহিত্যিক ছদ্মনাম বীরবল।
প্রশ্ন-৬। 'কারদানি' শব্দের অর্থ কী? [ঢা. বো.
'২২; দি. বো. '২৩]
উত্তর: 'কারদানি' শব্দের অর্থ বাহাদুরি।
প্রশ্ন ৭। যথার্থ শিক্ষিত হতে হলে কী দরকার?
[কু, বো. '২০; ব. বো. '২৩]
উত্তর: যথার্থ গুরুর কাজ শিষ্যের আত্মাকে উদ্বোধিত
করা এবং তার অন্তর্নিহিত সকল প্রচ্ছন্ন শক্তিকে ব্যক্ত করে তোলা।
প্রশ্ন ৮। মনের দাবি রক্ষা না করলে কী বাঁচে
না? [রা. বো. '১৯]
উত্তর: মনের দাবি রক্ষা না করলে মানুষের আত্মা
বাঁচে না।
প্রশ্ন ৯। 'ভাঁড়েও ভবানী' অর্থ কী? [কুমিল্লা
ক্যাডেট কলেজ]
উত্তর: 'ভাঁড়েও ভবানী' অর্থ রিক্ত, শূন্য।
প্রশ্ন ১০। কোনটিকে লেখক জাতির জীবনীশক্তি হ্রাস
করা বলেছেন? [গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি হাই স্কুল, ঢাকা]
উত্তর: সাহিত্যচর্চার আনন্দ থেকে বঞ্চিত হওয়ার
অর্থকে লেখক জাতির জীবনীশক্তি হ্রাস করা বলেছেন।
প্রশ্ন ১১। 'সুসার' শব্দের অর্থ কী? [কুমিল্লা
জিলা স্কুল]
উত্তর: 'সুসার' শব্দের অর্থ প্রাচুর্য।
প্রশ্ন ১২। 'কারদানি' শব্দের অর্থ কী? [ঢা. বো.
'২২]
উত্তর: 'কারদানি' শব্দের অর্থ বাহাদুরি।
প্রশ্ন ১৩। যথার্থ গুরুর কাজ কী? [ঢা. বো. '২০]
উত্তর: যথার্থ গুরুর কাজ শিষ্যের আত্মাকে উদ্বোধিত
করা এবং তার অন্তর্নিহিত সকল প্রচ্ছন্ন শক্তিকে ব্যক্ত করে তোলা।
প্রশ্ন ১৪। সাহিত্যচর্চার আনন্দ থেকে বঞ্চিত
হওয়ার অর্থ কী? [রা. বো. '২০]
উত্তর: সাহিত্যচর্চার আনন্দ থেকে বঞ্চিত হওয়ার
অর্থ হলো জাতির জীবনীশক্তি হ্রাস করা।
প্রশ্ন ১৫। যথার্থ শিক্ষিত হতে হলে কী দরকার?
[কু. বো. '২০]
উত্তর: যথার্থ শিক্ষিত হতে হলে মনের প্রসার
দরকার।
প্রশ্ন ১৬। 'কেতাবি' অর্থ কী? [সি. বো. '২০]
অথবা, 'কেতাবি' শব্দের অর্থ কী? [ম. বো. '২০]
উত্তর: 'কেতাবি' অর্থ কেতাব অনুসরণ করে চলে
যারা।
প্রশ্ন ১৭। মনের দাবি রক্ষা না করলে কী বাঁচে
না? [রা. বো. '১৯]
উত্তর: মনের দাবি রক্ষা না করলে মানুষের আত্মা
বাঁচে না।
প্রশ্ন ১৮। কাব্যামৃতে আমাদের অরুচি ধরেছে কেন?
[য. বো. '১৯]
উত্তর: কাব্যামৃতে আমাদের অরুচি ধরেছে প্রচলিত
শিক্ষার দোষে।
প্রশ্ন ১৯। প্রমথ চৌধুরীর সাহিত্যিক ছদ্মনাম
কী? [সকল বোর্ড ২০১৮; কু. বো. '১৭; ঢা. বো. '১৫]
উত্তর: প্রমথ চৌধুরীর সাহিত্যিক ছদ্মনাম 'বীরবল'।
প্রশ্ন ২০। মনের আক্ষেপ প্রকাশ করতে মাঝে মাঝে
কী লাগাতে হয়? [মির্জাপুর ক্যাডেট কলেজ]
উত্তর: মনের আক্ষেপ প্রকাশ করতে মাঝে মাঝে কড়ি
লাগাতে হয়।
প্রশ্ন ২১। শিক্ষার সর্বপ্রধান অঙ্গ কোনটি?
[আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মতিঝিল, ঢাকা] উত্তর: শিক্ষার সর্বপ্রধান
অঙ্গ হলো সাহিত্যচর্চা।
প্রশ্ন ২২। প্রমথ চৌধুরীর ছদ্মনাম কী? [রাজশাহী
ক্যাডেট কলেজ]
উত্তর: প্রমথ চৌধুরীর ছদ্মনাম বীরবল।
প্রশ্ন ২৩। শিক্ষকের সার্থকতা কোথায়? [বগুড়া
ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজ]
উত্তর: শিক্ষকের সার্থকতা হচ্ছে ছাত্রকে শিক্ষা
অর্জন করতে সক্ষম করায়।
প্রশ্ন ২৪। 'ডেমোক্রেসি' অর্থ কী? [ন্যাশনাল
আইডিয়াল স্কুল, ঢাকা]
উত্তর: 'ডেমোক্রেসি' অর্থ 'গণতন্ত্র'।
প্রশ্ন ২৫। 'পদচারণ' কার লেখা? [বি এ এফ শাহীন
কলেজ, যশোর]
উত্তর: 'পদচারণ' প্রমথ চৌধুরীর লেখা।
প্রশ্ন ২৬। কী ছাড়া সাহিত্যচর্চার উপায়ান্তর
নেই? [কানাইঘাট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, সিলেট]
উত্তর: বই পড়া ছাড়া সাহিত্যচর্চার উপায়ান্তর
নেই।
প্রশ্ন ২৭। 'কপোল' শব্দের অর্থ কী?
উত্তর: 'কপোল' শব্দের অর্থগাল।
প্রশ্ন ২৮। লেখক কোনটিকে স্কুল-কলেজের ওপরে স্থান দিয়েছেন?
উত্তর: লেখক লাইব্রেরিকে স্কুল-কলেজের ওপরে
স্থান দিয়েছেন।
প্রশ্ন ২৯। লেখক লাইব্রেরিকে কিসের ওপরে স্থান
দিয়েছেন?
উত্তর: লেখক লাইব্রেরিকে স্কুল-কলেজের ওপরে
স্থান দিয়েছেন।
প্রশ্ন ৩০। কে শিষ্যের আত্মাকে উদ্বোধিত করেন?
উত্তর: যিনি যথার্থ গুরু তিনিই শিষ্যের আত্মাকে
উদ্বোধিত করেন।
প্রশ্ন ৩১। কিসের জন্য আমরা সকলে উদ্বাহু?
উত্তর: শিক্ষার ফল লাভের জন্য আমরা সকলে উদ্বাহু।
প্রশ্ন ৩২। কাকে আমরা নিষ্কর্মার দলে ফেলি?
উত্তর: কেউ স্বেচ্ছায় বই পড়লে তাকে আমরা নিষ্কর্মার
দলে ফেলি।
প্রশ্ন ৩৩। বই পড়ার প্রধান দুটি দিক কী কী?
উত্তর: বই পড়ার প্রধান দুটি দিক হলো যথাক্রমে
প্রাতিষ্ঠানিক উপায় ও অপ্রাতিষ্ঠানিক উপায়।
প্রশ্ন ৩৪। শিক্ষা অর্জনে উত্তরসাধক মাত্র কে?
উত্তর: শিক্ষা অর্জনে গুরু উত্তরসাধক মাত্র।
প্রশ্ন ৩৫। বিজ্ঞানের চর্চা কোথায়?
উত্তর: বিজ্ঞানের চর্চা জাদুঘরে।
প্রশ্ন ৩৬। কাব্যামৃতে অরুচি ধরার দোষ কার?
উত্তর: কাব্যামৃতে অরুচি ধরার দোষ প্রচলিত
শিক্ষার
প্রশ্ন ২৯। লেখক লাইব্রেরিকে কিসের ওপরে স্থান
দিয়েছেন?
উত্তর: লেখক লাইব্রেরিকে স্কুল-কলেজের ওপরে
স্থান দিয়েছেন।
প্রশ্ন ৩০। কে শিষ্যের আত্মাকে উদ্বোধিত করেন?
উত্তর: যিনি যথার্থ গুরু তিনিই শিষ্যের আত্মাকে
উদ্বোধিত করেন।
প্রশ্ন ৩১। কিসের জন্য আমরা সকলে উদ্বাহু?
উত্তর: শিক্ষার ফল লাভের জন্য আমরা সকলে উদ্বাহু।
প্রশ্ন ৩২। কাকে আমরা নিষ্কর্মার দলে ফেলি?
উত্তর: কেউ স্বেচ্ছায় বই পড়লে তাকে আমরা নিষ্কর্মার
দলে ফেলি।
প্রশ্ন ৩৩। বই পড়ার প্রধান দুটি দিক কী কী?
উত্তর: বই পড়ার প্রধান দুটি দিক হলো যথাক্রমে
প্রাতিষ্ঠানিক উপায় ও অপ্রাতিষ্ঠানিক উপায়।
প্রশ্ন ৩৪। শিক্ষা অর্জনে উত্তরসাধক মাত্র কে?
উত্তর: শিক্ষা অর্জনে গুরু উত্তরসাধক মাত্র।
প্রশ্ন ৩৫। বিজ্ঞানের চর্চা কোথায়?
উত্তর: বিজ্ঞানের চর্চা জাদুঘরে।
প্রশ্ন ৩৬। কাব্যামৃতে অরুচি ধরার দোষ কার?
উত্তর: কাব্যামৃতে অরুচি ধরার দোষ প্রচলিত শিক্ষার
প্রশ্ন ২৯। লেখক লাইব্রেরিকে কিসের ওপরে স্থান
দিয়েছেন?
উত্তর: লেখক লাইব্রেরিকে স্কুল-কলেজের ওপরে
স্থান দিয়েছেন।
প্রশ্ন ৩০। কে শিষ্যের আত্মাকে উদ্বোধিত করেন?
উত্তর: যিনি যথার্থ গুরু তিনিই শিষ্যের আত্মাকে
উদ্বোধিত করেন।
প্রশ্ন ৩১। কিসের জন্য আমরা সকলে উদ্বাহু?
উত্তর: শিক্ষার ফল লাভের জন্য আমরা সকলে উদ্বাহু।
প্রশ্ন ৩২। কাকে আমরা নিষ্কর্মার দলে ফেলি?
উত্তর: কেউ স্বেচ্ছায় বই পড়লে তাকে আমরা নিষ্কর্মার
দলে ফেলি।
প্রশ্ন ৩৩। বই পড়ার প্রধান দুটি দিক কী কী?
উত্তর: বই পড়ার প্রধান দুটি দিক হলো যথাক্রমে
প্রাতিষ্ঠানিক উপায় ও অপ্রাতিষ্ঠানিক উপায়।
প্রশ্ন ৩৪। শিক্ষা অর্জনে উত্তরসাধক মাত্র কে?
উত্তর: শিক্ষা অর্জনে গুরু উত্তরসাধক মাত্র।
প্রশ্ন ৩৫। বিজ্ঞানের চর্চা কোথায়?
উত্তর: বিজ্ঞানের চর্চা জাদুঘরে।
প্রশ্ন ৩৬। কাব্যামৃতে অরুচি ধরার দোষ কার?
উত্তর: কাব্যামৃতে অরুচি ধরার দোষ প্রচলিত শিক্ষার
উত্তর: লেখক লাইব্রেরিকে
স্কুল-কলেজের ওপরে স্থান দিয়েছেন।
অনুধাবনমূলক
প্রশ্ন
প্রশ্ন ১। 'আমাদের স্কুল-কলেজের শিক্ষার পদ্ধতি
ঠিক উল্টো।'- মানে কী? [মির্জাপুর ক্যাডেট কলেজ, রাজশাহী ক্যাডেট কলেজ]
উত্তর: 'আমাদের স্কুল-কলেজের শিক্ষার পদ্ধতি
ঠিক উল্টো।'--এর মানে হচ্ছে স্কুল-কলেজের প্রচলিত মুখস্থবিদ্যা মনুষ্যত্ব অর্জনের ক্ষেত্রে
প্রকৃত শিক্ষার বিপরীত।
'বই পড়া' প্রবন্ধে লেখক বই পড়ার গুরুত্ব তুলে
ধরেছেন। মনের প্রসারতার জন্য, জ্ঞানভান্ডারকে সমৃদ্ধ করার জন্য, প্রকৃত শিক্ষা লাভ
করে মনুষ্যত্ব অর্জনের জন্য বই পড়ার কোনো বিকল্প নেই। কিন্তু আমাদের স্কুলে-কলেজের
শিক্ষার পদ্ধতিতে সেই সুযোগ নেই। এখানে শিক্ষার সঙ্গে আনন্দের যোগ নেই, শিক্ষার্থীকে
বই পড়ার জন্য লাইব্রেরিমুখী করার প্রবণতা নেই। এখানে কেবল পরীক্ষায় পাসের জন্য নোট
মুখস্থ করানো হয়। ব্যাপারটা যেন অনেকটা শিশুকে জোর করে খাদ্য গেলানোর মতো অবস্থা। কেননা
শিক্ষার্থীরা এক্ষেত্রে পাঠটি পুরোপুরি না বুঝে কেবল পাঠ মুখস্থ করে। ফলে তাদের মানসিক
বিকাশ এবং চিন্তাশক্তির পূর্ণ প্রকাশ লক্ষ করা যায় না। তাই এই শিক্ষা বই পড়ে প্রকৃত
শিক্ষিত হওয়ার বিপরীত বা উলটো।
প্রশ্ন ২। প্রমথ চৌধুরী' লাইব্রেরিকে স্কুল কলেজের
উপরে স্থান দিয়েছেন কেন? [আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মতিঝিল, ঢাকা]
উত্তর: লাইব্রেরিতে মানুষ স্বেচ্ছায় স্বশিক্ষিত
হওয়ার সুযোগ পায় বলে প্রমথ চৌধুরী লাইব্রেরিকে স্কুল-কলেজের ওপরে স্থান দিয়েছেন।
'বই পড়া' প্রবন্ধে লেখক জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চায়
এবং প্রকৃত শিক্ষা অর্জনের ক্ষেত্রে লাইব্রেরির অবদানের কথা বলেছেন। তিনি লাইব্রেরিকে
মনের হাসপাতাল হিসেবে অভিহিত করেছেন। কারণ মানুষ লাইব্রেরিতে গিয়ে বই পড়ে মনের অসুস্থতা
দূর করতে পারে। প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থায় মানুষ প্রকৃত শিক্ষা অর্জনে ব্যর্থ হয়। অথচ
লাইব্রেরিতে বই পড়ার মাধ্যমে সেই শিক্ষা অর্জন করা যায়। প্রকৃত শিক্ষা হচ্ছে মনুষ্যত্ববোধসম্পন্ন
মানুষ হওয়ার শিক্ষা। আর এই শিক্ষার সর্বপ্রধান অঙ্গ হচ্ছে সাহিত্যচর্চা। এর জন্য লাইব্রেরির
বিকল্প আর কিছুই নেই। মানুষ লাইব্রেরিতে গিয়ে খুব সহজেই নিজের পছন্দ অনুযায়ী বই নির্বাচন
করে পড়তে পারে। তাতে তার মনের বিকাশ সাধিত হয়। সেই সঙ্গে আনন্দ লাভের মাধ্যমে প্রকৃত
শিক্ষা অর্জিত হয়। এসব কারণে প্রমথ চৌধুরী লাইব্রেরিকে স্কুল-কলেজের ওপরে স্থান দিয়েছেন।
প্রশ্ন ৩। "লাইব্রেরির সার্থকতা হাসপাতালের
চাইতে কিছু কম নয়।" প্রাবন্ধিক এ কথা কেন বলেছেন? [বগুড়া ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক
স্কুল ও কলেজ]
উত্তর: লাইব্রেরিতে মনের রোগ ভালো হয় বলে প্রাবন্ধিক
"লাইব্রেরির সার্থকতা হাসপাতালের চাইতে কিছু কম নয়" কথাটি বলেছেন।
মানুষের শরীরের মতো মনও অসুস্থ হয়। তখন সেই অসুস্থতার
জন্য চিকিৎসার প্রয়োজন হয়। বই পড়ার মাধ্যমে মানুষের অসুস্থতা দূর করা সম্ভব। বই মনের
ক্ষুদ্রতা, জড়তা, নীচতা, হীনতা দূর করে। মনকে সজীব ও প্রাণময় করে তোলে। মনের অসুস্থতা
দূর হয়। এসব কারণে মানুষ লাইব্রেরিতে গিয়ে খুব সহজে নিজের পছন্দমতো বই নির্বাচন করে
পড়তে পারে। তাই প্রাবন্ধিক লাইব্রেরিকে মনের হাসপাতাল বলে অভিহিত করেছেন।
প্রশ্ন ৪। শিক্ষা আমাদের গায়ের জ্বালা ও চোখের
জল দুই-ই দূর করবে।' উক্তিটি ব্যাখ্য কর। [বিএ এফ শাহীন কলেজ, ঢাকা]
উত্তর: "শিক্ষা আমাদের গায়ের
জ্বালা ও চোখের জল, দুই-ই দূর করবে"- উক্তিটির মধ্য দিয়ে শিক্ষা সম্পর্কে সাধারণ
মানুষের ভুল ধারণা প্রকাশ পেয়েছে।
"আমাদের দেশ রোগ-শোক, দুঃখ-দারিদ্র্যের
দেশ। সুন্দর জীবনধারণ করা এখানে কঠিন। তাই এখানে শিক্ষাকে উপার্জনের মাধ্যম হিসেবে
বিবেচনা করা হয় এবং যত বেশি শিক্ষা তত বেশি উপার্জন। প্রতিষ্ঠানিক শিক্ষা গ্রহণ শেষে
যদি যথাযথ উপার্জনের পথ সুগম হয়, তাহলে আর কোনো দুঃখ থাকবে না। আর্থিক সচ্ছলতা নিশ্চিত
হলে আমরা ভাবি, আমাদের চোখের জল আর ঝরবে না। তাই আমাদের বিশ্বাস, শিক্ষা আমাদের গায়ের
জ্বালা ও চোখের জল দুই-ই দূর করবে .
প্রশ্ন ৫। সাহিত্যের রস উপভোগ করতে আমরা প্রস্তুত
নই কেন? [বিএ এফ শাহীন কলেজ, যশোর]
উত্তর: সাহিত্যের ফল হাতে হাতে পাওয়া যায় না
বলে আমরা সাহিত্যের রস উপভোগ করতে প্রস্তুত নই।
সাহিত্য মানুষের সুকুমার বৃত্তিকে জাগিয়ে তোলে।
মানুষকে বিকশিত করে তোলে। সাহিত্যের রস মানুষের আত্মাকে সজীব করে তোলে। কিন্তু আমরা
যেকোনো পাঠের ফল সরাসরি প্রত্যাশা করি। আর এ কারণেই আমরা সাহিত্যের রস উপভোগ করতে প্রস্তুত
নই।
প্রশ্ন ৬। লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে কীভাবে
দেশের উপকার করা যায়? বুঝিয়ে লেখ।
উত্তর: 'লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে মানুষকে
জ্ঞান অর্জনের সুযোগ করে দিয়ে দেশের উপকার করা যায়।
প্রকৃত শিক্ষিত ও জ্ঞানী ব্যক্তির দ্বারাই দেশের
কল্যাণ সাধিত হয়। প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থায় মানুষ প্রকৃত শিক্ষা অর্জনে ব্যর্থ হয়। এজন্য
মানুষকে লাইব্রেরির শরণাপন্ন হতে হয়। মানুষ লাইব্রেরি থেকে তার জ্ঞানের পরিধিকে বিস্তৃত
করতে পারে এবং নিজেকে দেশের কল্যাণে নিয়োজিত করার সুযোগ পায় আর দেশের এমন উপকার লাইব্রেরি
প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়েই সম্ভব।
প্রশ্ন ৭। "সাহিত্যচর্চার জন্য চাই লাইব্রেরি।"-ব্যাখ্যা
কর।
উত্তর: বই পড়া অর্থাৎ সাহিত্যচর্চার জন্য লাইব্রেরি
অপরিহার্য।
বাস্তবতার দিকে তাকালে আমরা দেখতে পাই যে, বিভিন্ন
ধরনের চর্চা ভিন্ন ভিন্ন স্থানে অনুষ্ঠিত হয়। যেমন- ধর্মের চর্চা মন্দির কিংবা মসজিদে,
দর্শনের চর্চা গুহায়, নীতির চর্চা ঘরে এবং বিজ্ঞানের চর্চা জাদুঘরে। ঠিক তেমনই সাহিত্যের
চর্চার জন্য লাইব্রেরির কোনো বিকল্প নেই।
প্রশ্ন ৮। লেখকের কাউকে শখ হিসেবে বই পড়তে পরামর্শ
দিতে না চাওয়ার কারণ ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: বই পড়া মানুষের সর্বশ্রেষ্ঠ শখ হওয়া
সত্ত্বেও লেখক কাউকেই বই পড়তে পরামর্শ দিতে চাননি।
প্রথম কারণ, লেখকের সেই পরামর্শ কেউ গ্রাহ্য
করবেন না এজন্য যে আমরা জাতি হিসেবে শৌখিন নই। আর দ্বিতীয় কারণ হলো- রোগ-শোক, দুঃখ-দারিদ্র্যের
দেশে যেখানে স্বাভাবিকভাবে জীবনধারণই প্রধান সমস্যা সেখানে শখ করে বই পড়ার প্রস্তাব
পাঠকের কাছে খুব নির্মম ঠেকবে।
প্রশ্ন ৯। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা পূর্ণাঙ্গ
না হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে যে শিক্ষা
দেওয়া হয় তা অপূর্ণাঙ্গ শিক্ষা। আমাদের দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অর্থাৎ স্কুল-কলেজগুলোতে
যে ধরনের শিক্ষা দেওয়া হয়ে থাকে তা অনেক ক্ষেত্রেই জ্ঞান বিকাশে সহায়ক নয়। শুধু পরীক্ষায়
পাস করার দিকে শিক্ষার্থীদের নজর থাকে। শিক্ষকরাও পাসের লক্ষ্য নিয়েই তাদের শিক্ষা
দেন। নোটসর্বস্ব বিদ্যা অর্জন করে কারণে আত্মবিকাশের সুযোগ হয় না। উদরপূর্তির ব্যবস্থা
হয়তো তাতে হয়, কিন্তু অপূর্ণ শিক্ষার
প্রশ্ন ১০। "কিন্তু এই গেলা আর ওগলানো দর্শকের
কাছে তামাশা হলেও বাজিকরের কাছে তা প্রাণান্তকর ব্যাপার"- ব্যাখ্যা কর।
উত্তর: উদ্ধৃত বাক্যটি দ্বারা বাজিকরের প্রাণান্তকর
চেষ্টা ও তার সাধনার ফলাফল বোঝানোর মধ্য দিয়ে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থাকে ইঙ্গিত করা হয়েছে।
বাজিকর বিভিন্ন আকার ও আয়তনের বস্তু গিলে দর্শকের
সামনে তা উদগিরণ করে। এটা দর্শকের কাছে নিতান্ত তামাশা ও অদ্ভুত কৌশল মনে হলেও মূলত
এ কাজটা করতে বাজিকরের বহু শ্রম ব্যয়ের দরকার হয়। তেমনই আমাদের এই সময়ে ছাত্ররা নোটের
লেখা তোতাপাখির মতো মুখস্থ করে পরীক্ষার খাতায় লিখে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়। মানুষ এতে
বাহবা দেয়। মূলত এই ছাত্র ঐ বাজিকরের মতোই প্রাণান্তকর চেষ্টার মাধ্যমে পরীক্ষায় নম্বর
পেয়েছে।
প্রশ্ন ১১। স্কুল-কলেজের শিক্ষাকে লেখক ত্রুটিপূর্ণ
বলেছেন কেন?
উত্তর: প্রাবন্ধিক প্রমথ চৌধুরী আমাদের দেশে
প্রচলিত স্কুল-কলেজের শিক্ষাকে ত্রুটিপূর্ণ বলেছেন।
লেখকের মতে, শিক্ষা মানুষের আত্মাকে উদ্বোধিত
করে, মনুষ্যত্ববোধ জাগ্রত করে। কিন্তু বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থায় সেই সুযোগ নেই। বর্তমানে
স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা শিক্ষকের দেওয়া নোট মুখস্থ করে এবং পরীক্ষার খাতায় তা ওগরায়।
তাই লেখক স্কুল-কলেজের প্রচলিত শিক্ষাকে ত্রুটিপূর্ণ বলেছেন।
প্রশ্ন ১২। পুঁজিবাদী সমাজে সাহিত্যপাঠের পরিস্থিতি
কেমন তা বুঝিয়ে লেখ।
উত্তর: পুঁজিবাদী সমাজে সাহিত্যের বই কেনাকে
অপচয় ও অনর্থক মনে করা হয়; তাই সাহিত্যপাঠের পরিস্থিতি সেখানে স্বভাবতই নাজুক বলে প্রতীয়মান
হয়।
পুঁজিবাদী সমাজের সাধারণ দৃষ্টিভঙ্গি হলো- শিক্ষা
বা জ্ঞান কেবল অর্থ উপার্জনের জন্যই প্রয়োজনীয়। মননশীলতা আর বুদ্ধিবৃত্তিক জ্ঞান অর্জনের
জন্য কারও তেমন কোনো আগ্রহ দেখা যায় না। ব্যবসায়িক স্বার্থে অর্থ ব্যয় করতে কেউ কার্পণ্য
না করলেও সাহিত্য বা কাব্যচর্চার জন্য কানাকড়িও খরচ করতে সবার অনীহা দেখা যায়।
সৃজনশীল
পাঠ্যবইয়ের সৃজনশীল প্রশ্ন:
জাতীয় জীবনধারা গঙ্গা-যমুনার মতোই দুই ধারায়
প্রবাহিত। এক ধারার নাম আত্মরক্ষা বা স্বার্থপ্রসার, আরেক ধারার নাম আত্মপ্রকাশ বা
পরমার্থ বৃদ্ধি। একদিকে যুদ্ধবিগ্রহ, মামলা-ফ্যাসাদ প্রভৃতি কদর্য দিক; অপরদিকে সাহিত্য,
শিল্প, ধর্ম প্রভৃতি কল্যাণপ্রদ দিক। একদিকে শুধু কাজের জন্য কাজ। অপরদিকে আনন্দের
জন্য কাজ। একদিকে সংগ্রহ, আরেক দিকে সৃষ্টি। যে জাতি দ্বিতীয় দিকটির প্রতি উদাসীন থেকে
শুধু প্রথম দিকটির সাধনা করে, সে জাতি কখনও উঁচু জীবনের অধিকারী হতে পারে না।
ক. 'ভাঁড়েও ভবানী' অর্থ কী?
খ. অন্তর্নিহিত শক্তি বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
গ. উদ্দীপকে বর্ণিত প্রথম দিকটি 'বই পড়া' প্রবন্ধের
যে দিকটিকে ইঙ্গিত করে তা ব্যাখ্যা কর।
ঘ. "উদ্দীপকে পরমার্থ বৃদ্ধির প্রতি যে
গুরুত্ব দেয়া হয়েছে তা 'বই পড়া' প্রবন্ধের লেখকের মতকে সমর্থন করে।"- মন্তব্যটির
বিচার কর।
১ নং
প্রশ্নের উত্তর
ক নং প্রশ্নের উত্তর
'ভাঁড়েও ভবানী' অর্থ হচ্ছে- রিক্ত বা শূন্য।
খ নং প্রশ্নের উত্তর
. 'অন্তর্নিহিত শক্তি' বলতে নিজের মনকে নিজে
যথার্থ উপায়ে গড়ে তোলার শক্তিকে বোঝানো হয়েছে।
শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে মানুষকে ভেতর থেকে
মানুষ করে তোলা। যে মানুষ সত্য, ন্যায় ও মানবকল্যাণ নিশ্চিত করতে নিরলস কাজ করেন, তিনিই
প্রকৃত শিক্ষিত। এই শিক্ষা অর্জন করতে হয়, কেউ কাউকে তা দিতে পারে না। এই কারণেই শিক্ষক
কেবল শিক্ষার্থীদের পথ দেখাতে পারেন, কৌতূহল বাড়াতে পারেন, বুদ্ধিবৃত্তিকে জাগ্রত করতে
পারেন, মনোরাজ্যের ঐশ্বর্যের সন্ধান দিয়ে তাদের জ্ঞান-পিপাসা বাড়াতে পারেন। এর বেশি
কিছুই তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়। প্রকৃত শিক্ষক বা যথার্থ গুরু তাঁর শিষ্যের অন্তর্নিহিত
সব প্রচ্ছন্ন শক্তি ব্যক্ত করার উপায় বলে দেন।
সারকথা: যে শক্তিবলে নিজের
মন নিজে গড়া যায় সেটিই অন্তর্নিহিত শক্তি।
গ নং প্রশ্নের উত্তর
. উদ্দীপকে বর্ণিত প্রথম দিকটি 'বই পড়া' প্রবন্ধের
ত্রুটিপূর্ণ শিক্ষাপদ্ধতির দিকটিকে ইঙ্গিত করে।
শিক্ষা হচ্ছে আনন্দের মধ্য দিয়ে প্রাপ্ত জ্ঞান
যা জীবন ও জগতের কল্যাণ সাধনে ব্যবহারযোগ্য। জোর করে চাপিয়ে দেওয়া আর দায়ে পড়ে মুখস্থ
করে সনদপত্র অর্জন করা শিক্ষা নয়। প্রকৃত শিক্ষা তো নয়ই। যথার্থ শিক্ষিত হতে হলে মনের
যে প্রসারতা দরকার তা কেবল পাঠাভ্যাসের মাধ্যমেই সম্ভব।
উদ্দীপকে আত্মস্বার্থ ও পরকল্যাণ এই দুটি প্রধান
বিষয় ব্যাখ্যা করা হয়েছে। 'বই পড়া' প্রবন্ধেও প্রধান দুটি বিষয় ব্যাখ্যা করা হয়েছে।
একটি স্বার্থরক্ষার শিক্ষা বা অর্থ উপার্জনের শিক্ষা, অন্যটি মানবকল্যাণে আত্মনিয়োগ
করার প্রকৃত শিক্ষা বা বই পড়ে জ্ঞান অর্জন। এখানে উদ্দীপকে আলোচনার প্রথম দিকটির সাথে
'বই পড়া' প্রবন্ধের অর্থ উপার্জনের ত্রুটিপূর্ণ, শিক্ষাব্যবস্থার দিকটি সাদৃশ্যপূর্ণ
হয়ে উঠেছে। উদ্দীপকের প্রথম দিকগুলো হচ্ছে আত্মরক্ষা বা স্বার্থপ্রসার, যার ফলস্বরূপ
যুদ্ধবিগ্রহ, মামলা-ফ্যাসাদ প্রভৃতি। অন্যদিকে 'বই পড়া' প্রবন্ধে আছে স্কুল-কলেজের'
ত্রুটিপূর্ণ শিক্ষাপদ্ধতি, জোর করে বিদ্যা গেলানো, শারীরিক ও মানসিক অবস্থার কথা বিবেচনা
না করে তাদের শিক্ষাদান, তাদের স্বশিক্ষিত হয়ে ওঠার সুযোগ না দিয়ে বাধা সৃষ্টি করা
প্রভৃতি। এভাবে উদ্দীপক ও 'বই পড়া' প্রবন্ধের নেতিবাচক দিকগুলো আলোচনা করলে এগুলোর
উভয়ের মধ্যে গভীর মিল পাওয়া যায়।
সারকথা: উদ্দীপকে প্রথম দিকটিতে
স্বার্থরক্ষা ও আত্মপ্রসারের বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। আর 'বই পড়া' প্রবন্ধে মানুষের
অর্থ উপার্জন ও আত্মকল্যাণের জন্য শিক্ষালাভ করাকে ত্রুটিপূর্ণ শিক্ষা বলা হয়েছে। এই
দুটি পরস্পর সাদৃশ্যপূর্ণ।
ঘ নং প্রশ্নের উত্তর
. উদ্দীপকে পরমার্থ বা পরম সত্য বৃদ্ধির প্রতি
যে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে তা 'বই পড়া' প্রবন্ধের লেখকের মতকে সমর্থন করে।- মন্তব্যটি যথার্থ।
শিক্ষা মানুষকে আত্মিক ও মানসিক বিকাশ সাধন করে
কল্যাণকামী কর্মকাণ্ডে অনুপ্রাণিত করে। যে শিক্ষা তা করে না, তাকে প্রকৃত শিক্ষা বলা
যায় না। আমাদের স্কুল-কলেজে রুটিন মেনে যে শিক্ষা দেওয়া হয়, তাতে প্রকৃত শিক্ষা লাভ
হয় না। কারণ প্রকৃত শিক্ষা হচ্ছে স্বশিক্ষা, যা মানুষ স্বাচ্ছন্দ্যচিত্তে, স্বতঃস্ফূর্তভাবে
অর্জন করে। আর তা অর্জনের প্রাণকেন্দ্র হচ্ছে লাইব্রেরি বা পাঠাগার।
হিসেবে আমাদের বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থাকে দায়ী
করেছেন। প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থা কীভাবে আমাদের অর্থ উপার্জন করতে শেখায়, কীভাবে আমাদের
হৃদয়বৃত্তিকে প্রস্ফুটিত না করে নষ্ট করে দেয়, সেই বিষয়টি ব্যাখ্যা করেছেন। সেই ব্যাখ্যাটির
সাথে উদ্দীপকের পরমার্থ বৃদ্ধির প্রতি গুরুত্ব দেওয়ার বিষয়টি সাদৃশ্যপূর্ণ। 'বই পড়া'
প্রবন্ধে লেখক বই পড়ার উপযোগিতা ও পাঠকের মানসিকতা আলোচনা করেছেন। তিনি পাঠে অনীহার
কারণ
উদ্দীপকে লেখক আত্মপ্রকাশ বা পরমার্থ বৃদ্ধির
কথা বলেছেন। তিনি কল্যাণের দিকটিকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে জাতির উন্নতির দিকটি ব্যাখ্যা
করেছেন। তিনি মনে করেন, যে জাতি আত্মপ্রকাশের প্রতি উদাসীন থেকে শুধু আত্মরক্ষার দিকটির
সাধনা করে, সেই জাতি উঁচু জীবনে প্রবেশ করতে পারে না। 'বই পড়া' প্রবন্ধেও লেখক বলেছেন
যথার্থ শিক্ষিত হয়ে উঠতে হলে স্কুল-কলেজের বাইরে মানুষকে স্বশিক্ষায় নিজেকে পরিপূর্ণ
করে তুলতে হবে। স্বশিক্ষা হচ্ছে প্রগতিশীল জীবন ও জগতের সাথে তাল মিলিয়ে চলার শিক্ষা।
উদ্দীপকে লেখক জাতিকে উন্নত জীবন লাভে পরমার্থের সাধনার প্রতি গুরুত্ব দিয়েছেন যা
'বই পড়া' প্রবন্ধের লেখকের মতামতকে প্রতিফলিত করেছে।
সারকথা: মানবকল্যাণে আত্মনিয়োগের
শিক্ষাই প্রকৃত শিক্ষা।
সেই শিক্ষা স্কুল-কলেজের সীমাবদ্ধ শিক্ষায় পাওয়া
যায় না। উদ্দীপকে পরমার্থ সাধনার যে কথা বলা হয়েছে, তার মূলে এই স্বশিক্ষা বা প্রকৃত
শিক্ষার গুরুত্ব অপরিসীম। উদ্দীপক ও 'বই পড়া' প্রবন্ধে এই বিষয়টি অভিন্নভাবে প্রকাশ
পেয়েছে।
বোর্ডের সৃজনশীল
প্রশ্ন ও উত্তর:
প্রশ্ন ১। পেশাজীবী দম্পতির একমাত্র
সন্তান মাহিম। মায়ের ইচ্ছা সে একজন সফল প্রকৌশলী হবে। তাই মা সাবরিনা সিলেবাস বহির্ভূত
কোনো বই পড়তে দেখলে অত্যন্ত বিরক্ত হন। তবে বাবা সাইফুল সাহেব পাঠ্যপুস্তকের পাশাপাশি
বিভিন্ন ধরনের বই পড়তে উদ্বুদ্ধ করেন। বাবার এমন অনুপ্রেরণায় মাহিম যেমন সহজেই বুয়েটে
চান্স পায় তেমনই শুভ্র চিন্তা-চেতনায়ও সে হয়ে ওঠে সমৃদ্ধ। [ঢাকা বোর্ড ২০২৪]
ক. সাহিত্যচর্চার আনন্দ থেকে বঞ্চিত হওয়ার অর্থকী?
খ. "বিদ্যার সাধনা শিষ্যকে নিজে অর্জন করতে
হয়"- বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
গ. উদ্দীপকের সাইফুল সাহেবের মধ্যে 'বই পড়া'
প্রবন্ধের যে দিকটি ফুটে উঠেছে তা ব্যাখ্যা কর।
ঘ. "প্রগতিশীল জগতের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে
উদ্দীপকের মাহিমের শুভ্র চিন্তা সমর্থনযোগ্য”- মন্তব্যটি 'বই পড়া' প্রবন্ধের আলোকে বিশ্লেষণ
কর।
১নং প্রশ্নের উত্তর
ক নং প্রশ্নের উত্তর
সাহিত্যচর্চার
আনন্দ থেকে বঞ্চিত হওয়ার অর্থ জাতির জীবনীশক্তির হ্রাস করা।
খ নং প্রশ্নের উত্তর
."বিদ্যার সাধনা শিষ্যকে নিজে অর্জন করতে
হয়" বলতে বোঝানো হয়েছে গুরু শিষ্যকে বিদ্যাদান করতে পারেন না, তিনি উত্তরসাধক
মাত্র।
শিক্ষকের সার্থকতা শিক্ষাদান করায় নয়, ছাত্রকে
শিক্ষা অর্জন করতে সক্ষম করায়। গুরু শিষ্যকে বিদ্যালাভের পথ দেখিয়ে দিতে পারেন, তার
বুদ্ধিবৃত্তিকে জাগ্রত করে দিতে পারেন, তার জ্ঞানপিপাসাকে বাড়িয়ে দিতে পারেন। কিন্তু
শিক্ষা ছাত্রের নিজেকে অর্জন করে নিতে হয়। যে ছাত্র নিজে থেকে শিক্ষা গ্রহণে তৎপর না
হবে তাকে কোনোভাবেই শিক্ষাদান করা সম্ভব নয়। তাই বলা হয়েছে, বিদ্যার সাধনা শিষ্যকে
নিজে অর্জন করতে হয়।
গ নং প্রশ্নের উত্তর
. উদ্দীপকের সাইফুল সাহেবের মধ্যে 'বই পড়া' প্রবন্ধের
যে দিকটি ফুটে উঠেছে তা হলো বই পড়ার মাধ্যমে মানুষের জ্ঞানকে সমৃদ্ধ করা।
প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা কখনো মানুষকে পরিপূর্ণ
করে গড়ে তুলতে পারে না। ফলে জীবন সমৃদ্ধ হয় না। আর জীবনকে সমৃদ্ধ করার প্রধান শর্ত
হলো জ্ঞানভান্ডারকে পরিপূর্ণ করা। এজন্য প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনার পাশাপাশি আরও নানা
বই পড়ে নিজেকে সমৃদ্ধ করতে হয়।
উদ্দীপকের সাইফুল সাহেব তার ছেলে মাহিমকে পাঠ্যবইয়ের
পাশাপাশি আরও নানা ধরনের বই পড়তে উদ্বুদ্ধ করেন। বাবার এমন অনুপ্রেরণায় মাহিম শুভ্র
চিন্তা-চেতনায় সমৃদ্ধ হয়ে ওঠে।
বই পড়া' প্রবন্ধে প্রাবন্ধিক আসলে এই বিষয়টিরই
অবতারণা করেছেন। সেখানে বলা হয়েছে, প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা হয়তো আমাদের উদরপূর্তির ব্যবস্থা
করে কিন্তু নিজেকে সমৃদ্ধ করতে চাইলে পাঠ্যের বাইরে পাঠকের নিজ পছন্দের বই পড়ার উপায়ান্তর
নেই, যা মূলত বই পড়ার গুরুত্বকে ইঙ্গিত করে। তাই বলা যায়, সাইফুল সাহেবের মধ্যে 'বই
পড়া' প্রবন্ধের যে দিকটি ফুটে উঠেছে তা হলো বই পড়ার মাধ্যমে মানুষের জ্ঞানকে সমৃদ্ধ
করা।
ঘ নং প্রশ্নের উত্তর
. "প্রগতিশীল জগতের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে
উদ্দীপকের মাহিমের শুভ্র চিন্তা সমর্থনযোগ্য" মন্তব্যটি 'বই পড়া' প্রবন্ধের আলোকে
যথার্থ।
বই মানবসভ্যতার শ্রেষ্ঠ প্রকাশমাধ্যম। যুগ যুগ
ধরে অনুসন্ধিৎসু মানুষের অভিজ্ঞতালব্ধ জ্ঞানই বইয়ে লিপিবদ্ধ থাকে। তাই বই পড়ে মানুষের
জ্ঞানপিপাসা যতটা তৃপ্ত হয় ততটা অন্য কোনোভাবে হয় না। আর নিজেকে সমৃদ্ধ করার অন্যতম
উপায় হলো বই পড়া।
'বই পড়া' প্রবন্ধে প্রাবন্ধিক প্রাতিষ্ঠানিক
শিক্ষার চেয়ে স্বেচ্ছায় জ্ঞানচর্চাকে বেশি প্রাধান্য দিয়েছেন। কেননা প্রাতিষ্ঠানিক
শিক্ষায় বিদ্যাদানের চেয়ে বিদ্যা গেলানো হয় বেশি। যার দরুন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা শেষে
যে ব্যক্তি ডিগ্রি নিয়ে বের হয় তার মধ্যে আর প্রাণশক্তি থাকে না। সে সমৃদ্ধ হওয়ার পরিবর্তে
আরও ফতুর হয়ে বেরিয়ে আসে। যার ফলে প্রগতিশীল এই জগতের সাথে তাল মিলিয়ে সে চলতে পারে
না।
বর্তমানে এই প্রতিযোগিতার বিশ্বে টিকে থাকতে
চাইলে শুধু উদরপূর্তির বিদ্যা লাভ করলে চলবে না। বই পড়ে জ্ঞান অর্জন করে নিজেকে সমৃদ্ধ
করতে না পারলে মুখ থুবড়ে পড়ে যেতে হবে। এই কথাটাই মূলত 'বই পড়া' প্রবন্ধের মূল সুর।
উদ্দীপকেও দেখা যায়, মাহিম সিলেবাসের বইয়ের পাশাপাশি অন্যান্য বই পড়েছে বলে সে শুভ্র
চিন্তার অধিকারী হয়েছে, আবার কাঙিক্ষত ইচ্ছাও পূর্ণ হয়েছে। তাই বলা যায়, প্রগতিশীল
জগতের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে উদ্দীপকের মাহিমের শুভ্র চিন্তা সমর্থনযোগ্য।
প্রশ্ন ২। মিসেস তামিমা মেয়ের
প্রাতিষ্ঠানিক বই ছাড়া অন্য কোনো বই পড়া সময় আর অর্থের অপচয় মনে করেন। মেয়ের হাতে কোনো
গল্প-উপন্যাস দেখলেই ঘোর আপত্তি তার। তিনি মনে করেন-ভালো প্রাতিষ্ঠানিক ফলাফল, এরপর
ভালো চাকরি- এই তো জীবন। কিন্তু স্বামী হাবীব রহমান স্ত্রীর এই ধারণার ঘোর বিরোধী-
আর তাই তো মেয়ের জন্য অপ্রাতিষ্ঠানিক বই বিশেষ করে জীবনী, গল্প-উপন্যাস- এইসব কিনে
দেওয়াতে কখনো আপত্তি করেন না। তিনি বলেন-মনের বিকাশের জন্য, আলোকিত হওয়ার জন্য সাহিত্যচর্চার
বিকল্প নেই। [রাজশাহী বোর্ড ২০২৪]
ক. কোনটি শিক্ষার সর্বপ্রধান অঙ্গ?
খ. 'দেহের মৃত্যুর রেজিস্টারি রাখা হয়, আত্মার
হয় না।'- কেন বলা হয়েছে?
গ. উদ্দীপকের মিসেস তামিমার মধ্যে 'বই পড়া' প্রবন্ধের
যে দিকটি ফুটে উঠেছে তা ব্যাখ্যা কর।
ঘ. উদ্দীপকের হাবীব রহমানের কথায় 'বই পড়া' প্রবন্ধের
মূল চেতনারই যথার্থ প্রতিফলন ঘটেছে। মন্তব্যটির যৌক্তিকতা বিচার কর।
২নং প্রশ্নের উত্তর
ক নং প্রশ্নের উত্তর
. শিক্ষার সর্বপ্রধান অঙ্গ হলো সাহিত্যচর্চা।
খ নং প্রশ্নের উত্তর
. আমাদের দেশে স্কুল-কলেজের ভুল শিক্ষাপদ্ধতি
কীভাবে ছাত্রদের শিক্ষার ব্যাপারে নিস্পৃহ করে রাখে সেই প্রসঙ্গেই উক্তিটি করা হয়েছে।
দেহ ও আত্মার সমন্বয়ে মানুষ। মানুষের মৃত্যু
হয় একই সঙ্গে দৈহিক ও আত্মিক। দৈহিক মৃত্যুটা সবার দৃষ্টিগোচর হয়। কিন্তু দৈহিকভাবে
বেঁচে থাকলেও অনেক ক্ষেত্রে ব্যক্তির আত্মিক মৃত্যু ঘটে। এই আত্মিক মৃত্যুর কথা কেউ
ভাবেও না, জানেও না। এ দেশে ভুল শিক্ষাপদ্ধতির কারণে কত ছেলের যে শিক্ষা সম্পর্কে ভীতি
ও অনীহা সৃষ্টি হয় সেটির হিসাব কেউ রাখে না। ফলে প্রাণস্ফূর্তি নিয়ে বেড়ে ওঠার পরিবর্তে
ভীতি ও অপ্রাপ্তির পিছনে ছুটতে ছুটতে তার আত্মার মৃত্যু ঘটে। শিক্ষার্থীর এই আত্মিক
মৃত্যুর প্রসঙ্গেই প্রাবন্ধিক বলেছেন, 'দেহের মৃত্যুর রেজিস্টারি রাখা হয়, আত্মার হয়
না।'
গ নং প্রশ্নের উত্তর
. উদ্দীপকের মিসেস তামিমার মধ্যে 'বই পড়া' প্রবন্ধের
শিক্ষার ফল লাভের দিক তথা নগদ বাজার দরের দিকটি প্রতিফলিত হয়েছে।
শিক্ষার উদ্দেশ্য মনুষ্যত্ববোধ জাগিয়ে তোলা।
সেই জাগরণ ঘটাতে না পারলে সেটাকে প্রকৃত শিক্ষা বলা যায় না। প্রকৃত শিক্ষা লাভ করার
জন্য তাই জ্ঞানচর্চা করতে হয়। এই জ্ঞানচর্চার
অন্যতম একটি কার্যকর মাধ্যম হলো বিভিন্ন ধরনের
বই পড়া।
উদ্দীপকের মিসেস তামিমা মেয়ের প্রাতিষ্ঠানিক
বই ছাড়া অন্য কোনো বই পড়াকে সময় আর অর্থের অপচয় মনে করেন। মেয়ের হাতে কোনো গল্প-উপন্যাস
দেখলেই ঘোর আপত্তি তার। তিনি মনে করেন ভালো প্রাতিষ্ঠানিক ফলাফল, এরপর ভালো চাকরি পাওয়া-
এটাই জীবনের সফলতা। 'বই পড়া' প্রবন্ধে এ ধরনের মানুষ সম্পর্কে লেখক বলেছেন যে
তারা মহাভ্রান্তির মধ্যে আছে। তিনি বলেন যে আমাদের
শিক্ষিত সমাজে এমন কিছু মানুষ আছে যারা অর্থের উপর লোলুপদৃষ্টি দেয়। সাহিত্যচর্চার
সুফল সম্পর্কে তারা সন্দিহান। তারা মনে করে সাহিত্যচর্চায় কোনো লাভ নেই। লেখক মনে করেন,
তাদের এই ধারণা মূলত মহাভ্রান্তি। উদ্দীপকের মিসেস তামিমার মধ্যেও ঠিক এই দিকটিই ফুটে
উঠেছে।
ঘ নং প্রশ্নের উত্তর
. উদ্দীপকের হাবীব রহমানের কথায় 'বই পড়া' প্রবন্ধের
মূল চেতনারই যথার্থ প্রতিফলন ঘটেছে।- মন্তব্যটি যৌক্তিক।
বই পড়ে এবং ভ্রমণ করে মানুষ বিচিত্র বিষয়ে জ্ঞান
অর্জন করতে পারে। এর মধ্যে বই পড়ে জ্ঞান অর্জন করা অপেক্ষাকৃত সহজ। বই হলো জ্ঞানের
সমুদ্র। পাঠ্যবইয়ের বাইরে বিভিন্ন বই পড়ার মাধ্যমে মানুষ সাহিত্যচর্চাকে ত্বরান্বিত
করতে পারে।
উদ্দীপকের মিসেস তামিমা মনে করেন প্রাতিষ্ঠানিক
বইয়ের বাইরে অন্য কোনো বই পড়া সময় ও অর্থের অপচয় মাত্র। কিন্তু তার স্বামী হাবীব রহমান
স্ত্রীর এই ধারণার ঘোর বিরোধী। তিনি তার মেয়ের জন্য জীবনী, গল্প, উপন্যাস এসব অপ্রাতিষ্ঠানিক
বই কিনে দেওয়াতে কখনো আপত্তি করেন না। তিনি বলেন- মনের বিকাশের জন্য, আলোকিত হওয়ার
জন্য সাহিত্যচর্চার বিকল্প নেই।
প্রবন্ধটিতে লেখক আমাদের প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থার
ত্রুটি, অসংগতি, অপূর্ণতা, অতীতের শিক্ষাব্যবস্থা, শিক্ষাগ্রহণের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা,
সাহিত্যচর্চার গুরুত্ব, বই পড়ার গুরুত্ব ইত্যাদি দিক তুলে ধরেছেন। 'বই পড়া' প্রবন্ধে
সারকথা হচ্ছে বই পড়ে এবং সাহিত্যচর্চার মাধ্যমে জীবনকে জ্ঞানের আলোয় আলোকিত করে তোলা।
উদ্দীপকের হাবীব রহমানের বক্তব্যে এই চেতনাই প্রতিফলিত হয়েছে। তাই বলা যায়, প্রশ্নে
প্রদত্ত মন্তব্যটি যৌক্তিক।
প্রশ্ন ৩। কালাম পাঠ্যবইয়ের পাশাপশি
বিভিন্ন বই পড়তে ভালোবাসে। অবসর সময়ে সে নানা রকম বই পড়ে। সে মনে করে অন্যান্য বই পড়লে
তার জ্ঞানের রাজ্য অনেক বেশি সমৃদ্ধ হবে। সে বই পড়ার আগ্রহ থেকে জেলা সরকারি গণগ্রন্থাগারের
সদস্য হয়। তার মা কখনো তাকে বাধা না দিলেও বাবাসহ অন্যান্য আত্মীয়-স্বজন বিষয়টি ভালো
চোখে দেখে না। তাঁরা মনে করে ভালো ফলাফল করে জীবনে প্রতিষ্ঠিত হতে হলে শুধু পাঠ্যবই
পড়াই বাঞ্ছনীয়। [চট্টগ্রাম বোর্ড ২০২৪]
ক. প্রমথ চৌধুরীর সাহিত্যিক ছদ্মনাম কী?
খ. সাহিত্যচর্চার জন্য লাইব্রেরির প্রয়োজনীয়তা
ব্যাখ্যা কর।
গ. উদ্দীপকে কালামের বাবা ও অন্যান্য আত্মীয়দের
মানসিকতায় 'বই পড়া' প্রবন্ধের যে ভাব ফুটে উঠেছে- তা ব্যাখ্যা কর।
ঘ. "উদ্দীপকের কালাম যেন 'বই পড়া' প্রবন্ধের
লেখকের মানসপুত্র।" মন্তব্যটির যথার্থতা বিচার কর।
৩নং প্রশ্নের উত্তর
ক নং প্রশ্নের উত্তর
. প্রথম চৌধুরীর সাহিত্যিক ছদ্মনাম 'বীরবল'।
খ নং প্রশ্নের উত্তর
. স্বশিক্ষায় শিক্ষিত হওয়ার জন্য তথা সাহিত্যচর্চার
জন্য লাইব্রেরির প্রয়োজনীয়তা অনেক।
সুশিক্ষিত লোক মাত্রই স্বশিক্ষিত। কিন্তু প্রাতিষ্ঠানিক
শিক্ষার চাপে পড়ে ব্যক্তি জরাজীর্ণ হয়ে পড়ে। তখন তারা প্রকৃত শিক্ষা অর্জন করতে পারে
না। শিক্ষার আসল মাহাত্ম্য তখনই উপলব্ধ হয় যখন ব্যক্তি সুশিক্ষায় শিক্ষিত হয়। আর এজন্য
আমাদের বই পড়তে হবে এবং সাহিত্যচর্চা করতে হবে। আর সাহিত্যচর্চার জন্য লাইব্রেরিই একমাত্র
জায়গা যেখানে ব্যক্তি তার পছন্দমতো বই পড়ে নানা বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করতে পারে। তাই স্বশিক্ষায়
শিক্ষিত হওয়া তথা সাহিত্যচর্চার জন্য লাইব্রেরির প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম।
গ নং প্রশ্নের উত্তর
. উদ্দীপকে কালামের বাবা ও অন্য আত্মীয়দের মানসিকতায়
'বই পড়া' প্রবন্ধের যে ভাব ফুটে উঠেছে সেটি হলো লেখাপড়া করা, হয় শুধু অর্থ উপার্জনের
জন্য।
আমাদের বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থায় শিক্ষার্থীরা
যথার্থ শিক্ষিত হয়ে উঠতে পারে না। সেখানে তাদের শিক্ষা গেলানো হয়। আর অভিভাবকরাও ভাবে
যে পাঠ্যবই ভালোভাবে পড়ে অর্থ
উপার্জনের ব্যবস্থা করাই যথার্থ শিক্ষা। ফলে
ব্যক্তির জ্ঞানের পরিধি বৃদ্ধি পায় না। আর সে সুশিক্ষিত হতে পারে না উদ্দীপকে দেখা
যায়, কালাম পাঠ্যবইয়ের পাশাপাশি বিভিন্ন বই পড়তে ভালোবাসে। অবসর সময়ে সে নানা রকম বই
পড়ে।
তার মা তাকে কখনো বাধা দেয় না, কিন্তু বাবাসহ
অন্য আত্মীয়স্বজন বিষয়টি ভালোভাবে দেখে না। তারা মনে করেন ভালো ফলাফল করে জীবনে প্রতিষ্ঠিত
হতে হলে শুধু পাঠ্যবই পড়াই বাঞ্ছনীয়। 'বই পড়া' প্রবন্ধে লেখক এ ধরনের
চিন্তার সমালোচনা করেছেন। লেখক বলেছেন, মানুষ
শুধু অর্থ উপার্জনের জন্যই পড়াশোনা করে। যার ফলে পড়াশোনা শেষে মানুষ জীর্ণ হয়ে বের
হয়। তার মধ্যে আর প্রাণশক্তি থাকে না। শিক্ষাকে অর্থ উপার্জনের মাধ্যম মনে করলে কেউ
সুশিক্ষিত হতে পারে না। তাই বলা যায়, উদ্দীপকে কালামের বাবা ও অন্য আত্মীয়দের মানসিকতায়
'বই পড়া' প্রবন্ধের অর্থ উপার্জনের মাধ্যম হলো শিক্ষা- এই ভাব ফুটে উঠেছে।
ঘ নং প্রশ্নের উত্তর
. "উদ্দীপকের কালাম যেন 'বই পড়া' প্রবন্ধের
লেখকের মানসপুত্র।"- মন্তব্যটি যথার্থ।
শিক্ষা অর্জনের অন্যতম উপায় হলো বই পড়া। যথার্থ
শিক্ষা অর্জন করতে চাইলে পাঠ্যবইয়ের পাশাপাশি অন্যান্য বই পড়তে হয়। তা না হলে জ্ঞানের
পরিধি সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ে। তাই নিজেকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করতে চাইলে সব ধরনের বই পড়ার
বিকল্প নেই।
উদ্দীপকের কালাম পাঠ্যবইয়ের পাশাপাশি বিভিন্ন
বই পড়তে ভালোবাসে। অবসর সময়ে সে নানা রকম বই পড়ে। সে মনে করে অন্যান্য বই পড়লে তার
জ্ঞানের ভান্ডার অনেক বেশি সমৃদ্ধ হবে। বই পড়ার এই আগ্রহ থেকে সে জেলা সরকারি গণগ্রন্থাগারের
সদস্য হয়। কালামের এই চিন্তা-ভাবনাই 'বই পড়া' প্রবন্ধেরও মূল সুর।
'বই পড়া' প্রবন্ধে লেখক এরই অবতারণা করেছেন।
সেখানে দেখা যায়, যথার্থ শিক্ষিত হতে চাইলে বই পড়ার কোনো বিকল্প নেই। লেখক শিক্ষাব্যবস্থার
সমালোচনা করে ব্যক্তিকে স্বশিক্ষায় শিক্ষিত হওয়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করেছেন। এজন্য লাইব্রেরি
প্রতিষ্ঠার বিকল্প নেই বলে তিনি উল্লেখ করেছেন। কেননা লাইব্রেরিতে মানুষ নিজের ইচ্ছামতো
শিক্ষা লাভ করে সুশিক্ষায় শিক্ষিত হতে পারে। প্রগতিশীল জগতের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে
চাইলে সুশিক্ষায় শিক্ষিত হওয়া আবশ্যক বলে লেখক মনে করেন। মূলত 'বই পড়া' প্রবন্ধে লেখক
জাতির মানসিক বিকাশ ও সমৃদ্ধিতে বই পড়া, জ্ঞান ও সাহিত্যচর্চার গুরুত্বের কথা তুলে
ধরেছেন। এই একই ধরনের উপলব্ধি উদ্দীপকের কালামের মধ্যেও পাওয়া যায়। তাই বলা যায়, উদ্দীপকের
কালাম যেন 'বই পড়া' প্রবন্ধের লেখকের মানসপুত্র।
প্রশ্ন ৪। দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী
যোবায়েরের প্রবল ঝোঁক বই পড়ার প্রতি। পাঠ্যবইয়ের বাইরে কবিতা, উপন্যাস, সাইন্স ফিকশন,
গোয়েন্দা কাহিনি ইত্যাদি বিষয়ে তার বিস্তর আগ্রহ। তার বাবাও তাকে বই পড়তে ও বই কিনতে
উৎসাহিত করেন। পড়ার আগ্রহ দেখে বাবা তাকে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরিতে
ভর্তি করিয়ে দেন। একদিন সে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের লাইব্রেরির সদস্য হয়। [সিলেট বোর্ড
২০২৪]
ক. শিক্ষার সর্বপ্রধান অঙ্গ কী?
খ. মনের হাসপাতাল বলতে কী বোঝায়?
গ. উদ্দীপকের মূলভাব 'বই পড়া' প্রবন্ধের কোন
দিকের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ? ব্যাখ্যা কর।
ঘ. "উদ্দীপকের বিষয়বস্তু 'বই পড়া' প্রবন্ধের
অংশবিশেষ বর্ণনা মাত্র।" উক্তিটির যথার্থতা নিরূপণ কর
৪নং প্রশ্নের উত্তর
ক নং প্রশ্নের উত্তর
. শিক্ষার সর্বপ্রধান অঙ্গ হলো সাহিত্যচর্চা।
খ নং প্রশ্নের উত্তর
. মনের হাসপাতাল বলতে লেখক লাইব্রেরিকে বুঝিয়েছেন।
'বই পড়া' প্রবন্ধে লেখক মনে করেন বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থা আমাদেরকে বিভিন্ন দিক থেকে
অনেক ক্ষতি করেছে। স্কুল-কলেজের বর্তমান শিক্ষাপদ্ধতিতে নির্দিষ্ট পাঠ্যক্রমে শিক্ষার্থীরা
সংকীর্ণ পরিসরে মুখস্থবিদ্যা চর্চা করতে করতে শিক্ষার উদ্দেশ্য ও আনন্দ থেকে বঞ্চিত
থাকে। অন্যদিকে তারা লাইব্রেরি তথা গ্রন্থাগারে নিজ নিজ রুচি, পছন্দ ও চাহিদা অনুযায়ী
গল্প, কবিতা, উপন্যাস, নাটক অনুশীলন করতে পারে। ফলে অসুস্থতা নামক অজ্ঞতা, ক্ষুদ্রতা,
জড়তা কাটিয়ে উঠে তাদের মন-প্রাণ সরস, সজীব, সতেজ হয়ে আনন্দ-রসে পূর্ণ হয়ে ওঠে। তাই
মনের হাসপাতাল বলতে লাইব্রেরিকেই বোঝায়।
গ নং প্রশ্নের উত্তর
. উদ্দীপকের মূলভাব 'বই পড়া' প্রবন্ধের সাহিত্যচর্চার
বিষয়টির সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ।
বিভিন্ন বিষয়ে জ্ঞানার্জনের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ
মাধ্যম হলো বই পড়া। বই পড়ে জ্ঞান অর্জন করা অনেক সহজ ও কার্যকর একটি পন্থা। পাঠ্যবইয়ের
বাইরে কবিতা, উপন্যাস, গল্প ইত্যাদি বই পড়ার মাধ্যমে মানুষের জ্ঞানের জগৎ অনেক বিস্তৃত
ও প্রসারিত হয়।
উদ্দীপকের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী যোবায়েরের
বই পড়ার প্রতি প্রবল ঝোঁক। পাঠ্যবইয়ের বাইরে সে বিভিন্ন ধরনের বই পড়ে। তার বাবাও তাকে
বই পড়তে ও বই কিনতে উৎসাহিত করেন। পড়ার আগ্রহ দেখে বাবা তাকে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের
ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরিতে ভর্তি করিয়ে দেন। একদিন সে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের সদস্য হয়।
এখানে যোবায়ের ও তার বাবার মধ্যে সাহিত্যচর্চার প্রতি আগ্রহ লক্ষ করা যায়। 'বই পড়া'
প্রবন্ধেও লেখক এই সাহিত্যচর্চার প্রতি গুরুত্ব দিয়েছেন। তিনি মনে করেন সাহিত্যচর্চা
হলো শিক্ষার প্রধান অঙ্গ, এতে কোনো সন্দেহ নেই। আর এই সাহিত্যচর্চা করতে যেতে হবে লাইব্রেরিতে,
যা উদ্দীপকের মূলভাবে ফুটে উঠেছে।
ঘ নং প্রশ্নের উত্তর
. "উদ্দীপকের বিষয়বস্তু 'বই পড়া' প্রবন্ধের
অংশবিশেষ বর্ণনা মাত্র।"- উক্তিটি যথার্থ।
প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থায় শিক্ষার্থীদেরকে জোরপূর্বক
অধিক পরিমাণে বিদ্যা গেলানো হয় যা তারা হজম করতে পারে না। ফলে হিতে বিপরীত হয়। তাই
এর পরিবর্তে শিক্ষার্থীর মধ্যে পাঠ্যবই বহির্ভূত সাহিত্যচর্চার সুযোগ দেওয়া জরুরি,
যাতে তারা স্বশিক্ষিত হতে পারে।
উদ্দীপকের জোবায়েরের বই পড়ার প্রতি প্রবল ঝোঁক
দেখা যায়। পাঠ্যবইয়ের বাইরে সে কবিতা, উপন্যাস, সাইন্স ফিকশন, গোয়েন্দা কাহিনি ইত্যাদি
বিষয়ে জানতে আগ্রহী। তার এই আগ্রহকে তার বাবাও সমর্থন করে তাকে এই ব্যাপারে সহায়তা
করেন। 'বই পড়া' প্রবন্ধেও লেখক এই সাহিত্যচর্চার বিষয়টির প্রতি গুরুত্বারোপ করেছেন।
তবে এটি প্রবন্ধের একটি খণ্ডিত অংশ মাত্র। এই বিষয়টি ছাড়াও প্রবন্ধে আরও অনেক বিষয়
প্রতিফলিত হতে দেখা যায়।
'বই পড়া' প্রবন্ধে লেখক প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থার
সমালোচনা করেছেন। তিনি মনে করেন এই পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীরা বিদ্যা অর্জনের পরিবর্তে
আরও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থার ত্রুটি, অসংগতি, অপূর্ণতা, অতীতের শিক্ষাব্যবস্থা,
শিক্ষাগ্রহণের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা উল্লেখ করে তিনি বই পড়ার গুরুত্ব তুলে ধরেছেন।
আর সেই জন্য তিনি বেশি করে লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠার কথা বলেছেন। পাশাপাশি প্রগতিশীল জগতের
সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার জন্য সাহিত্যচর্চার প্রয়োজনীয়তা, জাতির মানসিক বিকাশ ও সমৃদ্ধিতে
বই পড়ার গুরুত্বও তুলে ধরেছেন, যা উদ্দীপকে নেই। তাই উল্লিখিত বিষয়গুলোর আলোকে পরিশেষে
একথা প্রমাণিত হয়, প্রশ্নে প্রদত্ত উক্তিটি যথার্থ।
প্রশ্ন ৫। বিয়ের দশ বছর পর রেবেকার
একটি পুত্রসন্তান হয়। অনেক সাধনার পুত্রকে বড় করতে গিয়ে তিনি দুধ, ডিম, কলা, মিষ্টি
একটার পর একটা জোর করে খাওয়াতে থাকেন। কিন্তু পুত্রের বয়স পাঁচ বছর হলেও সে হাঁটতে
পারে না। অস্বাভাবিক মোটা হওয়ায় তাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেলে ডাক্তার বলেন,
"বয়স ও রুচি অনুযায়ী যা খেতে চায় এবং যতটুকু খেতে পারে তাই খাওয়াবেন। অতিরিক্ত
খাওয়ার কারণে বয়সের তুলনায় মোটা বলে হাঁটা-শিখতে দেরি হচ্ছে।"
[দিনাজপুর বোর্ড ২০২৪]
ক. শিক্ষক কীসের সন্ধান দিতে পারেন?
খ. পেশাদারদের মহাভ্রান্তি বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
গ. উদ্দীপকের রেবেকার মানসিকতায় 'বই পড়া' প্রবন্ধের
যে দিকটি ফুটে উঠেছে তা ব্যাখ্যা কর।
ঘ. "উদ্দীপকের ডাক্তারের বক্তব্যের মধ্যেই
প্রমথ চৌধুরীর আকাঙ্ক্ষার প্রতিধ্বনি ঘটেছে"- মন্তব্যটির যথার্থতা নিরূপণ কর
৫ নং প্রশ্নের উত্তর
ক নং প্রশ্নের উত্তর
. শিক্ষক মনোরাজ্যের ঐশ্বর্যের সন্ধান দিতে পারেন।
খ নং প্রশ্নের উত্তর
. পেশাদারদের মহাভ্রান্তি বলতে সাহিত্যচর্চার
সুফল সম্পর্কে মানুষের ভুল ধারণাকে বোঝানো হয়েছে।
লেখকের মতে, আমাদের শিক্ষিত সমাজের লোলুপ দৃষ্টি
আজ অর্থের ওপরেই পড়ে আছে। তারা হাজার খানেক ল-রিপোর্ট কিনলেও একখানা কাব্যগ্রন্থ কিনতে
প্রস্তুত নন। কারণ তারা মনে করেন এতে ব্যবসায়ের কোনো লাভ নেই। তারা মনে করেন এই সাহিত্য
জজ শুনবেন না, ফলে তার কোনো মূল্য নেই। আর লেখক মনে করেন এটি তাদের মহাভ্রান্তি।
গ নং প্রশ্নের উত্তর
. উদ্দীপকের রেবেকার মানসিকতায় 'বই পড়া' প্রবন্ধের
প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থার চিত্রটি ফুটে উঠেছে।
বই পড়ার আসল উদ্দেশ্য হলো জ্ঞানভান্ডারকে সমৃদ্ধ
করা, মনের প্রসারন ঘটিয়ে মনুষ্যত্ব অর্জন করা। কিন্তু আমাদের স্কুল-কলেজের প্রচলিত
শিক্ষাব্যবস্থায় এটি মানা হয় না।
এখানে পরীক্ষায় পাশের জন্য নোট মুখস্থ করানো
হয়। ফলে শিক্ষার্থীর মানসিক বিকাশ এবং চিন্তাশক্তির পূর্ণ প্রকাশ লক্ষ করা যায় না।
উদ্দীপকের রেবেকা তার আদরের পুত্রকে বড় করতে
গিয়ে জোর করে দুধ, ডিম, কলা, মিষ্টি একটার পর একটা খাওয়াতে থাকে। কিন্তু পুত্রের বয়স
পাঁচ বছর হলেও সে হাঁটতে পারে না। অতিরিক্ত খাওয়ানোর কারণে বয়সের তুলনায় মোটা বলে সে
হাঁটা শিখতে পারছে না। রেবেকার এমন কর্মকান্ড লেখক 'বই পড়া' প্রবন্ধে তুলে ধরেছেন একটু
অন্যভাবে। লেখক আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার সমালোচনা করতে গিয়ে বলেন সন্তানের কল্যাণের
আশায় যেমন একজন মা তার সন্তানকে জোরপূর্বক খাবার খাওয়ান, ফলে তার ক্ষতি করে বসে, তেমনই
শিক্ষাব্যবস্থায়ও একজন শিক্ষার্থীকে অতিরিক্ত ও অপ্রয়োজনীয় বিদ্যা গেলানো হয়। এগুলো
সে হজম করতে পারে না, ফলে উপকারের থেকে অপকারই বেশি হয়।
ঘ নং প্রশ্নের উত্তর
. "উদ্দীপকের ডাক্তারের বক্তব্যের মধ্যেই
প্রমথ চৌধুরীর আকাঙক্ষার প্রতিধ্বনি ঘটেছে।" মন্তব্যটি যথার্থ।
শিক্ষা হচ্ছে আনন্দের মধ্যে অর্জিত জ্ঞান, যা
মানুষের জীবন ও জগতের কল্যাণ সাধন করে। জোর করে চাপিয়ে মুখস্থ করানো শিক্ষার প্রকৃত
পদ্ধতি নয়। তাতে হিতে বিপরীত হয়। তাই যথার্থ শিক্ষিত হতে চাইলে বই পড়ে মনের প্রসারতা
বৃদ্ধি করতে হবে।
উদ্দীপকের রেবেকা তার অনেক সাধনার সন্তানকে বড়
করতে গিয়ে দুধ, ডিম, কলা, মিষ্টি প্রভৃতি খাবার অধিক পরিমাণে খাওয়ানোর ফলে তার সন্তান
অস্বাভাবিক মোটা হয়ে যায় এবং হাঁটতে পারে না। সে তাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যায়। ডাক্তার
তখন বলেন, "বয়স ও রুচি অনুযায়ী যা খেতে চায় এবং যতটুকু খেতে পারে তাই খাওয়াবেন।
অতিরিক্ত খাওয়ার কারণে বয়সের তুলনায় মোটা বলে তার হাঁটা শিখতে দেরি হচ্ছে।" ডাক্তারের
এই বক্তব্যে 'বই পড়া' প্রবন্ধের লেখক প্রমথ চৌধুরীর আকাঙক্ষার প্রতীকী প্রতিধ্বনি ঘটেছে।
'বই পড়া' প্রবন্ধে লেখক প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থার
পদ্ধতিকে শিক্ষাগ্রহণের জন্য ক্ষতিকর হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থার
ত্রুটি ও অসংগত দিকগুলো উল্লেখ করে তিনি স্বশিক্ষায় শিক্ষিত হওয়ার প্রতি গুরুত্বারোপ
করেছেন। তিনি মনে করেন মানুষকে স্বেচ্ছায় বই পড়ার সুযোগ করে দিতে হবে। আর এর জন্য তিনি
অধিক সংখ্যক লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠার কথা বলেছেন। লাইব্রেরিকে তিনি মনের হাসপাতালের সঙ্গে
তুলনা করেছেন। তিনি মনে করেন স্বেচ্ছায় লাইব্রেরিতে বই পড়ার মাধ্যমে মানুষ স্বশিক্ষিত
হতে পারবে। আর স্বশিক্ষিত মানুষ মাত্রই সুশিক্ষিত। উদ্দীপকের মায়ের মতো যেন শিক্ষাকে
গেলানো না হয়। তবেই শিক্ষার্থীরা স্বশিক্ষিত ও সুশিক্ষিত হবে। লেখক উদ্দীপকের ডাক্তারের
মতোই সঠিক পদ্ধতির শিক্ষার আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করেছেন। তাই বলা যায়, প্রদত্ত মন্তব্যটি
যথার্থ।
প্রশ্ন ৬। পেশা তার দর্জিগিরি
কিন্তু নেশা তার বই পড়া। বাল্যকালে পিতা নানা না দেওয়ায় পঞ্চম শ্রেণির পর আর পড়তে পারেনি
কাশেম মিয়া। তবে বই পড়ার নেশা থেকেই বাড়ির পাশে প্রায় দুই হাজার বই নিয়ে গড়ে তুলেছে
'স্বপ্ন গড়ি লাইব্রেরি'। গ্রামের ছোট-বড় সবাই সেখানে জ্ঞানচর্চা করে। শিক্ষার্থীরা
পাঠ্যবইয়ের পাশাপাশি অন্যান্য বইও পড়ে। বিশ্ব ব্যবসায়ী মামুন মোল্যা তার সন্তানকে ঐ
লাইব্রেরিতে যেতে নিষেধ করে বলেন, "তোমার এত জ্ঞান অর্জনের দরকার নেই, বাসায় প্রাইভেট
শিক্ষক রেখেছি। তাঁর কাছে পড়ে (এ+) অর্জন করো।" [ময়মনসিংহ বোর্ড ২০২৪]
ক. পেশাদারদের মহাভ্রান্তি কী?
খ. সাহিত্যচর্চার সুফল সম্বন্ধে অনেকেই সন্দিহান
কেন?
গ. উদ্দীপকের মামুন মোল্যার মনোভাব 'বই পড়া'
প্রবন্ধের যে দিকটি নির্দেশ করে তা ব্যাখ্যা কর।
ঘ. "কাশেম মিয়ার উদ্যোগের মধ্যেই প্রমথ
চৌধুরীর আকাঙ্ক্ষার যথার্থ প্রতিফলন ঘটেছে"- মন্তব্যটির যৌক্তিকতা যাচাই কর।
৬নং প্রশ্নের উত্তর
ক নং প্রশ্নের উত্তর
. যে কথা জজে শোনে না, তার যে কোনো মূল্য নেই;
এটাই হচ্ছে পেশাদারদের মহাভ্রান্তি।
খ নং প্রশ্নের উত্তর
. সাহিত্যচর্চার সুফল হাতে হাতে পাওয়া যায় না
বলে এর সুফল সম্বন্ধে অনেকেই সন্দিহান।
আমাদের শিক্ষিত সমাজের লোলুপ দৃষ্টি আজ অর্থের
ওপরেই পড়ে রয়েছে। তাই তারা সাহিত্যসাধনা না করে অর্থসাধনা করে। কেননা সাহিত্যের কোনো
নগদ বাজারদর নেই। এর ফল হাতে হাতে পাওয়া যায় না এবং তা স্বচক্ষে প্রত্যক্ষ করার সুযোগ
নেই। ফলে সাহিত্যচর্চার সুফল সম্বন্ধে অনেকেই সন্দিহান।
গ নং প্রশ্নের উত্তর
. উদ্দীপকের মামুন মোল্যার 'বই পড়া' প্রবন্ধে
উল্লিখিত প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থায় শিক্ষিত হওয়ার দিকটিকে নির্দেশ করে। পাঠ্যবই পড়ে
কেবল সার্টিফিকেট অর্জন করা যায়, যথার্থ জ্ঞান অর্জন করা যায় না। তাই পাঠ্যবইয়ের পাশাপাশি
অন্যান্য বইও পড়া দরকার। তবেই প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত হওয়া যাবে।
উদ্দীপকে মামুন মোল্যা তার ছেলেকে লাইব্রেরিতে
যেতে নিষেধ করেন। সার্টিফিকেট লাভ করাটাই তাঁর কাছে বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে। জ্ঞান অর্জনের
প্রতি তার কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই। এ ধরনের মানসিকতা প্রসঙ্গে 'বই পড়া' প্রবন্ধের লেখক
পাশ করা ও শিক্ষিত হওয়া যে এক বস্তু নয় সেই বিষয়টি উত্থাপন করেছেন। অনেকেরই ধারণা,
দেশে যত ছেলে পাশ করছে ততই শিক্ষার বিস্তার হচ্ছে। অথচ শিক্ষার প্রকৃত উদ্দেশ্য পাশ
করে সার্টিফিকেট অর্জন নয়। শিক্ষার প্রকৃত উদ্দেশ্য জ্ঞান অর্জন করা। আর বেশি বেশি
বই পড়ার মাধ্যমে এই উদ্দেশ্য বাস্তবায়িত হতে পারে। সুতরাং উদ্দীপকের মামুন মোল্যার
মনোভাব 'বই পড়া' প্রবন্ধের তথাকথিত শিক্ষিত হওয়ার দিকটিকে নির্দেশ করে।
ঘ নং প্রশ্নের উত্তর
. কাশেম মিয়া লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা করে সবার মধ্যে
বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তোলে, যার উদ্যোগের মধ্যে প্রমথ চৌধুরীর আকাঙক্ষার যথার্থ প্রতিফলন
ঘটেছে।
জ্ঞান অর্জনে বেশি বেশি বই পড়া দরকার। সাহিত্যচর্চা
করা দরকার। আর এর জন্য প্রয়োজন লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা করা। কেননা লাইব্রেরিতে গিয়েই মানুষ
স্বেচ্ছায় চাহিদা ও পছন্দ অনুযায়ী বই পড়ার সুযোগ পায়।
উদ্দীপকের কাশেম মিয়া নিজ উদ্যোগে একটি লাইব্রেরি
প্রতিষ্ঠা করে। সেখানে সব ধরনের বইয়ের সমাহার আছে। তার লাইব্রেরিতে গিয়ে ছোট-বড় সবাই
জ্ঞানচর্চা করে। এভাবে সবার মধ্যে বই পড়ার অভ্যাস গড়ে ওঠে। এমন আকাঙক্ষা 'বই পড়া' প্রবন্ধের
প্রাবন্ধিকের মধ্যেও দেখতে পাওয়া যায়।
'বই পড়া' প্রবন্ধে প্রাবন্ধিক বই পড়ার প্রতি
গুরুত্বারোপ করেছেন। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার ঘাটতি দূর করার জন্য ব্যাপকভাবে বই পড়তে
বলেছেন। তিনি বই পড়ার অভ্যাস বাড়ানোর জন্য লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তা অনুভব
করেছেন। কেননা লাইব্রেরিতে গিয়ে স্বেচ্ছায় নিজের পছন্দ অনুযায়ী বই পড়ে শিক্ষিত হওয়া
যায়। লেখকের এই আকাঙক্ষার যথার্থ প্রতিফলন ঘটেছে উদ্দীপকের কাশেম মিয়ার উদ্যোগের মধ্যে।
তাই মন্তব্যটি যথার্থ।

Social Plugin